ক্রাইম

শিশুর চোখ নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ বর্ধমানের মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমানের শক্তিগড় থানার বাম এলাকার একটি বেসরকারি মাল্টি স্পেশালিটি হসপিটালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় একটু শিশুর চোখ নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করলেন এক দম্পতি। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এর কাছে চিকিৎসা সম্মন্ধিও হসপিটালের সমস্ত রিপোর্ট সহ অভিযোগ জমা করেছেন শিশুটির বাবা হিতেশ চৌধুরী। এমনকি ঘটনার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কে বলো হেল্প লাইনে ফোন করেও অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেন তিনি। আর এরপরই অভিযুক্ত হসপিটালের বিরুদ্ধে তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম। পাশাপাশি শিশুটির বাবা মায়ের বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে তদন্তের প্রয়োজনে।

যদিও হিতেশ চৌধুরী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মাল্টি স্পেশালিটি হসপিটালের নামে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার মতো পরিকাঠামোই নেই এই হসপিটালে। এনআইসিইউ-৩ (নিকু) সুবিধা থাকা একটা হাসপাতালে কেন আরপি স্ক্রিনিং করাতে পারলো না? শুধু এই কারনেই আমার ছেলেটা সারা জীবনের জন্য একটা চোখ হারাবে। এদিকে সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে আমায়। এরপরও কয়েক লাখ টাকা খরচ করতে হবে হয়তো ছেলেকে সুস্থ করতে। স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছ থেকে সমস্যার সমাধান না হলে আমি কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হবো।

হিতেশ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, গত ২৪ জুন তার স্ত্রী প্রিম্যাচিওর শিশুর জন্ম দেয়। এরপর ৪২ দিন ওই হাসপাতালে থাকার পরে তাকে জানানো হয়, তার ছেলে প্রিম্যাচিওর হবার জন্য চোখে সমস্যা আছে। দক্ষিণ ভারতের কোথাও নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য। চৌধুরী দম্পতি ওখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুটিকে নিয়ে এলে মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিশেষজ্ঞ জানিয়ে দেন, এই সমস্যা প্রিম্যাচিওর বেবির ক্ষেত্রে সাধারণত হয়ে থাকে। এর চিকিৎসা দু থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই করতে হয়।

এরপরই চৌধুরী দম্পতি শিশুটিকে দক্ষিণ ভারতের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু  সেখানেও চিকিৎসক শিশুটির চোখ পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন চোখ প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। হিতেশ চৌধুরী বলেন, ‘ তারপরেও তারা দুটি অপারেশন করেছেন যদি কোনভাবে দৃষ্টি একটু হলেও ফিরে আসে। তবে চান্স কম সেকথাও জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।’ মেডিক্যাল কলেজ ও দক্ষিণের ওই হাসপাতাল থেকে পরিস্কার করেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শিশুর চোখের এই পরিণতি বর্ধমানের ওই মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের ভুলেই হয়েছে।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম বলেন, ‘ অভিযোগ পেয়েছি। আমরা শিশুটির বাবা মায়ের বক্তব্য সহ চিকিৎসার সমস্ত কাগজ নিয়েছি। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে দ্রুত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্তে যদি সত্যিই হাসপাতালের দোষ থেকে থাকে সেক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ অন্যদিকে অভিযুক্ত মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের অধিকর্তা সৌমেন সাহা সিকদার বলেন, ‘ প্রিম্যাচিওর শিশুটিকে বাঁচানোই প্রথম কাজ ছিল আমাদের। সেই অবস্থা থেকে শিশুটিকে সুস্থ করার পরেই রেটিনোপ্যাথি অফ প্রিম্যাচুরিটি বা আরপি স্ক্রিনিং করার কথা বলা হয়েছিল। এখন তদন্ত শেষ হলে সব পরিষ্কার হবে।’

Recent Posts