বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে লাশ পাচারের অভিযোগ, আটক পাঁচ কর্মী

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: মরেও শান্তি নেই! মরদেহ চুরি করে শববাহী গাড়িতে চাপিয়ে সাতসকালে পালাচ্ছিল একদল দুষ্কৃতী। নিরাপত্তা কর্মীদের সন্দেহ হওয়ায় ধরে ফেলে পাচারকারীদের। অভিযোগ মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের ভিতর থেকে বেওয়ারিশ লাশ চুরি করে পাচার করে দিচ্ছিল একদল পাচারকারী। আর এই ঘটনায় বুধবার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে।পাচারকারী দের আটক করে বর্ধমান থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ পাচারের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে পাঁচজন কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল কৌস্তভ নায়েক জানিয়েছেন, ‘আমি স্বাস্থ্য ভবনে জরুরি কাজে কলকাতায় আছি। বেওয়ারিশ লাশ চুরি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানতে পেরেছি। আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার কারণে পাচারকারীরা ধরা পড়েছে। তাদের পুলিশ আটক করেছে। পুলিশ কে গোটা ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জানানো হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জেনে লিখিত অভিযোগ জানাবো। ‘

এদিকে কঠোর নিরাপত্তা থাকা সত্বেও কিভাবে খোদ মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের ভিতর থেকে মৃতদেহ চুরি করে পাচার করা হচ্ছিল তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। মেডিক্যাল কলেজের একাধিক কর্মী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই খোদ মেডিক্যাল কলেজের এক শ্রেণীর কর্মী এবং ডোম লাশ চুরি করে পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। আজ হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ায় বিষয়টি সামনে এসেছে। এই চক্রের সঙ্গে আরো কারা জড়িত আছে অবিলম্বে পুলিশ তদন্ত করে বের করুক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এদিন সকালে একটি ডবল ডেকার মৃতদেহ বহনকারী (স্বর্গ রথ) গাড়ির নিচে দুটি এবং ওপরে একটি লাশ চাপিয়ে মেডিক্যাল কলেজের ভিতর থেকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল মর্গের কয়েকজন কর্মী। সেইসময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের ঘটনাটি নজরে আসতেই তারা বিষয়টি জানতে চায়। সন্দেহ হওয়ায় গাড়িটিকে আটকে বর্ধমান থানার পুলিশ কে খবর দেওয়া হয়। এরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাড়ি থেকে লাশ গুলোকে নামিয়ে আবার  অ্যানাটমি বিভাগে ঢুকিয়ে দেয়। পাশাপাশি এই ঘটনায় যুক্ত থাকতে পারে সন্দেহে গাড়ির চালক সহ চারজন কর্মীকে আটক করে নিয়ে আসে থানায়।

এদিকে লাশ চুরি করে পাচার করার ঘটনা সামনে আসতেই ফের কঙ্কাল কাণ্ডের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিনের মৃতদেহের কোন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জীবিত মানব শরীরের কোনভাবেই কাজে লাগেনা। একমাত্র মৃতের শরীরের হাড়গোড় বা কঙ্কাল বিভিন্ন কাজে লাগে। যার বাজার মূল্যও প্রচুর। আর এই কারণেই মৃতদেহ চুরি করে বিক্রি করে দেওয়ার একটা চক্র বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় রয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজেও এই চক্র সক্রিয়? পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

আরো পড়ুন