গলসি ১ ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নির্বাচন কে নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ, ক্ষোভের মুখে বিধায়ক থেকে বিডিও

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, গলসি: ফের প্রকাশ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি ১ব্লক তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠী কোন্দল। এবারও দলের কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ খোদ বিধায়ক নেপাল ঘোরুই ও তার সহযোগী কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে। ক্ষোভের কারণ হিসেবে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে দলীয় কর্মীরাই অভিযোগ করেছেন, পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে দোলন দত্তের পরিবর্তে অনুপ চ্যাটার্জি কে টাকার বিনিময়ে সহ সভাপতি করা হয়েছে। রবিবার সিমনোর মোড় এলাকায় রাস্তায় দাড়িয়ে আন্দোলন করে দলের বিধায়কের বিরুদ্ধেই এই সেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে স্লোগান তুললেন গলসি ১ নং ব্লকের পারাজ অঞ্চল তৃণমূলের একাংশ। এই ঘটনায় ব্লক জুড়ে রীতিমত আলোড়ন পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

এমনকি বিক্ষোভকারী তৃণমূল কর্মীরা এব্যাপারে ইতিমধ্যেই ব্লক সভাপতিকে চিঠি দিয়ে তাদের অভিযোগ জানিয়েছেন। সেখানে সরাসরি ব্যঙ্গাত্মক অর্থে উল্লেখ্য করা হয়েছে, এটা বিডিও অফিস নয়, এটা পিডিও অফিস। অর্থাৎ পকেট ডেভলপমেন্ট অফিস। যা কার্যত আলোড়ন ফেলেছে এলাকায়। গলসি ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতির কাছে দেওয়া এই চিঠিতে সাক্ষর করেছেন এলাকার বহু মানুষ সহ তৃণমূল কর্মী। স্বাভাবিকভাবেই এমন ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পরেছে শাসক শিবির। এমনকি গলসি ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির নব নির্বাচিত সহ সভাপতি অনুপ চ্যাটার্জ্জীর অপসারণের দাবী জানান আন্দোলন কারীরা। পাশাপাশি দলীয় নির্দেশ মেনে দোলন দত্তকে সহ সভাপতির করার দাবীও জানানো কর্মীরা।

জানা গেছে, সম্প্রতি গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতি গঠনে সভাপতি ও সহ সভাপতি পদে নাম আসে আলপনা বাগদী ও দোলন দত্তর। সভাপতির নাম ঠিক থাকলেও, সহ সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বজন পোষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। পূর্বের সহসভাপতি অনুপ চ্যাটার্জ্জীকেই অবৈধভাবে নির্বাচিত করেছেন বিধায়ক ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে এলাকার সাত আটটি অঞ্চল থেকে সাধারণ মানুষ জেলা তৃণমূল সভাপতিকে লিখিত আবেদন করে জানিয়েছেন। যেখানে গলসি ১ নং ব্লকের বিডিও দেবলীনা দাসকেও নিশানা করা হয়েছে।

অভিযোগ পত্রে লেখা হয়েছে, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অনুপ চ্যাটার্জ্জী সহসভাপতি থাকাকালীন বিডিও অফিসকে কার্যত ‘ পিডিও ‘ অর্থাৎ পকেট ডেভলপমেন্ট অফিসে পরিনত করেছেন বলে ব্যাঙ্গ করা হয়। এও উল্লেখ করা হয়েছে, অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রের ১৬লাখ টাকা এই সময়ে লুঠ করেছেন তিনি। অবিলম্বে অনুপ চাটার্জি কে অপসারণ করে দলের দেওয়া নাম দোলন দত্ত কে পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হোক।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে গলসি ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি জনার্দ্দন চ্যাটার্জী জানিয়েছেন, ‘ এলাকার দলের কর্মীরা যে ক্ষোভ দেখাচ্ছেন তার যৌক্তিকতা রয়েছে। কারণ পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট বিতরণের ক্ষেত্রে আমাকে না জানিয়ে, অন্ধকারে রেখেই বিধায়ক ও তার সহযোগীরা বেশ কয়েকজনকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিল। দল থেকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ সভাপতির নাম এর তালিকা পাঠানো হয়েছিল। সহ সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে যুব, মহিলা ও মাদার সংগঠনের নেতৃত্ব দোলন দত্তের পরিবর্তে অনুপ চ্যাটার্জী কেই ভোট দেয়। তবে এক্ষেত্রে টাকা পয়সার কোনো লেনদেন হয়েছে কিনা বলতে পারবো না। আমি ইতিমধ্যেই সমগ্র ঘটনার বিষয়ে জেলা সভাপতিকে জানিয়েছি।’

অন্যদিকে বিধায়ক নেপাল ঘোরুই কে দলীয় কর্মীদের একাংশের বিক্ষোভ ও অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি অনুপ চ্যাটার্জি কে ফোন ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ এই প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না। যা বলার দলের মুখপাত্র বা দলের উচ্চ নেতৃত্বই বলতে পারবেন।’

আরো পড়ুন