ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, গলসি: গলসির রাইপুর ও আটপাড়া গ্রামে বেশকিছু গরীব চাষীর খাসের জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল। আর তাতে নাম জড়িয়েছে তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের এক নেতার। বর্ষায় চাষের মুখে জমি হারিয়ে দিশেহারা অসংখ্য চাষি। বিষয়টি নিয়ে তারা শুক্রবার গলসি ১ নং বিডিওর দারস্ত হন। সেখানেই অভিযোগকারী চাষীদের একটি ভিডিও তে বলতে শোনা গেছে, ব্লক তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি জাহির আব্বাস ওরফে সিপাই জমি কেড়ে নিচ্ছে। ভিডিও ভাইরাল হতেই গতকাল তৃণমূল নেতা বজলুর শা এক চাষিকে বাইকে করে তুলে নিয়ে যায় সিপাই – এর ফার্ম হাউসে। সেখানে তাকে শাসানো হয় বলে অভিযোগ।
চাষিদের দাবী, শিড়রাই, ধর্মপুর, পোতনা ও লোয়া মৌজায় উজিরন বিবির সিলিং এর বাইরে থাকা ৩৫ বিঘা জমি খাস করা হয়েছিল ততকালীন বামফ্রন্ট আমলে। তারপর তাদের ১২ বিঘা জমি ফেরত দিয়ে দেয় বামফ্রন্ট। বাকি থাকা ২৩ বিঘা জমি কমবেশী চল্লিশ বছর আগে বিলি করা হয় গরীব মানুষদের। সেই মতো এক এক জন চাষি তিন চার কাঠা করে জমি পেয়েছিলেন। তারপর থেকে সেই জমি ত্রিশ চল্লিশ বছর ধরে চাষ করে খাচ্ছিলেন তারা। এদের মধ্যে অনেকের জমির কাগজও আছে বলে জানান চাষিরা। অভিযোগ, তিন চারদিন আগে আচমচা সেই জমির আল ভেঁঙে একত্রিত করতে শুরু করেন উজিরন বিবির উত্তরসূরি সেখ কুতুবউদ্দিন, আলো মল্লিক ও সামসুদা সেখ।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উজিরন বিবির উত্তর সুরিরা চাষিদের জানায়, তারা মামলায় জমির ডিগ্রী পেয়েছেন। চাষিরা কাগজ দেখতে চাইলে তাদের তৃণমূল কার্যালয়ে সিপাই এর কাছে যেতে বলেন। চাষিরা আরও জানান, তারা বেশকিছু চাষি সিপাই এর কাছে গেলে সিপাই তাদের বলেন, ’ওরা জমির ডিগ্রী পেয়েছে, তোমরা জমি না ছাড়লে পুলিশ দিয়ে ঠিঙিয়ে জমি থেকে তুলে দেবে।’ চাষিদের দাবী, এতদিন ধরে তারা চাষ করে আসছিলেন। কোন কিছুই জানতে পারলেন না। আচমকা তৃণমূল পার্টি তাদের জমি কেড়ে নিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চাষি বলেন, উজিরন বিবির নাতি কুতুব সেখ সিপাই এর ছায়াসঙ্গী। সিপাই তাকে পঞ্চায়েত সদস্য করেছেন। আর এতে সম্পুর্ন মদত দিচ্ছেন সিপাই। তারা বলেন, বামফ্রন্টের আমলে জমি পেলাম। আর তৃণমূল সেই জমি কেড়ে নিচ্ছে। এদিকে এই ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়েছে ব্লক জুড়ে।
ব্লক তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি জাহির আব্বাস ওরফে সিপাই কে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,’ এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোন বিষয় নেই। যার জমি তার সরকারি কাগজ থাকলে কেউই কারুর জমি কেড়ে নিতে পারে না। তার জন্য প্রশাসনের একাধিক দপ্তর রয়েছে। জমি মালিকরা সেখানে গেলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। যারা দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন সেটা ভুল। এইসবের মধ্যে দলের কেউ জড়িত নেই।’ অন্যদিকে যে পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে জমি মালিকরা অভিযোগ তুলছেন, সেই শেখ কুতুবুদ্দিন জানিয়েছেন, ’ মিথ্যা অভিযোগ করছেন চাষীরা। তাদের কাছে যদি জমির কাগজ থাকে তাহলে প্রশাসনের কাছে গেলেই তো সুরাহা হয়ে যাবে। কিন্তু ওদের কাছে জমির কোন পাট্টা নেই।’