স্বাস্থ্য

বর্ধমানে বেসরকারি শিশু হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসার গাফিলতি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমানের ইন্দ্রকানন এলাকায় জিটি রোডের পাশে একটি বেসরকারি শিশু হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা একটি ২৩দিনের শিশুর চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করলেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়। অতি দ্রুত তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট জমা দেবারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় জানিয়েছেন, গতকাল অর্থাৎ বুধবারই তিনি ঘটনার বিষয়ে জেনেছিলেন। কিন্তু তাঁর কাছে কেউ অভিযোগ জানাতে আসেননি। আজ শিশুটির বাবা মা এসে অভিযোগ জানিয়েছেন। ওনাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছি। সঙ্গে সঙ্গে গোটা বিষয়টির দ্রুত তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য টিম তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাবার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত বীরভূমের বোলপুরের বাসিন্দা সব্যসাচী ঘোষ ও তার স্ত্রী বিনীতা ঘোষ অভিযোগ করেছেন, তাদের তিন সদ্যোজাত সন্তানের মধ্যে একটি পুত্র সন্তানের জন্মের পর শারীরিক কিছু সমস্যা থাকায় বর্ধমানের এই শিশু হাসপাতালে ২২দিন আগে নিয়ে এসে ভর্তি করেছিলেন। কিন্তু  বাইশদিন ভর্তি থাকার পরেও তারা জানতে পারেননি তাদের সন্তান আদপেও বেঁচে আছে কিনা। অভিযোগ সেটা তারা জানতে চাইলে ওই বেসরকারি শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে কর্মীরা নানাভাবে হেনস্থা করতে থাকেন।

এদিন শিশু পুত্রের মা বিনীতা ঘোষ বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে নিজেদের দোষ ঢাকতে এখন নানাভাবে মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। আমাদের বদনাম করার করার চেষ্টা করছে। আমি হাতজোড় করে সিএমওএইচ কে বলেছি, সব দোষ আমাদের মেনে নিচ্ছি। শুধু আমার ছেলেকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিক ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। যদি আরও টাকা লাগে আমরা টাকা দেব।’

এদিকে অভিযুক্ত বেসরকারি শিশু হাসপাতালের অংশীদার ও চিকিৎসক আশরাফুল মির্জা এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘ শিশুর পরিবারের লোকজন যে অভিযোগ করছেন সেটা সম্পূর্ন ভুল। ওদের আমরা সহযোগিতায় করিনি এটা একদম ভুল কথা। বরং ওনারা যেদিন জানতে পেরেছেন ওনাদের ছেলে বাঁচলে প্রতিবন্ধী হবেন, তারপরের দিন থেকেই আমাদের এড়িয়ে গিয়েছেন। আমি নিজের পকেট থেকে শিশুর ওষুধ কেনার টাকা দিয়েছি। ২৫-৩০ টা লোক এনে যে টাকাটা খরচ করলেন সেটা হাসপাতালে দিলে ওনাদেরই ভালো হত। এভাবে লোক এনে ভয় দেখিয়ে শিশুর চিকিৎসা হয়না।’

যদিও চিকিৎসকের কথার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন শিশু পুত্রের বাবা সব্যসাচী ঘোষ, তিনি বলেন ‘উনি মিথ্যাবাদী। প্রতারক, দালাল। চিকিৎসা সমাজের কলঙ্ক। এখানকার স্থানীয় বহু মানুষও এই হসপিটাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ শুনিয়েছেন। আর আমি যদি ৩০ জন লোক নিয়ে এখানে আসতাম তাহলে পুলিশ কেন তাদের গ্রেপ্তার করল না। সি সি টিভি ফুটেজ চেক করলেই তো সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। বরং ওই চিকিৎসক ফোনে আমার আমার স্ত্রী কে হুমকি দিয়েছেন, তিনি বর্ধমানে ব্যবসা করেন,  কিভাবে টাকা আদায় করতে হয় তিনি নাকি জানেন। আমি কালও বলেছি, আজও পুলিশকে বলেছি ওই চিকিৎসকের যদি আরো টাকা লাগবে আমি দেব। আমার ছেলেকে উনি সুস্থ করে ফিরিয়ে দিন।’ এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে ভেন্টিলেশনে থাকা শিশুটির ব্রেণের এতটাই ক্ষতি হয়ে গিয়েছে যে কোন মিরাকেল না ঘটলে শিশুটির বাঁচার আশা নেই বললেই চলে।