ফের দুর্ঘটনা সদরঘাট ব্রিজে, অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ স্থানীয়দের

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: ফের দুর্ঘটনা সদরঘাটের কৃষক সেতুর উপর। তবে গুরুতর জখম হলেও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন রীনা দাস নামে এক স্বাস্থ্য কর্মী। দুর্ঘটনার পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জখম মহিলাকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে রীনা দাসের বাম হাতে, কোমরে ও পেটে আঘাত লেগেছে। জরুরি ভিত্তিতে তার হাতের অপারেশন করানো হয়েছে। বর্তমানে সে হাসপাতালেই ভর্তি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে বর্ধমান থেকে আরামবাগ ও অন্যদিকে বাঁকুড়া জেলার সংযোগকারী দামোদর নদের উপর এই কৃষক সেতুতে সম্প্রতি একের পর এক দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর ঘটনা বাড়তে থাকায় তীব্র ক্ষোভের পাশাপাশি আতঙ্ক তৈরি হয়েছে যেকোন যানবাহন নিয়ে যাতায়াতকারী মানুষের মধ্যে। ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনের উপরেও। একমাসের ব্যবধানে এই কৃষক সেতুর উপরেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। আহত হয়েছেন আটজন। তারপরেও সেই অর্থে ব্রিজের উপরে যানচলাচলে নিয়ন্ত্রন আনতে সেভাবে কোন উদ্যোগ নেয়নি পুলিশ বলেই অভিযোগ করছেন এলাকার বাসিন্দারা। স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো সময় দুর্ঘটনাকে সামনে রেখে এই এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ায় আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে বলে স্থানীয়দের অনেকেই জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত মঙ্গলবার দুপুরে স্কুটি নিয়ে ডিউটি থেকে বাড়ি ফেরার পথে সেতুর উপর লরির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন রায়নার বাঁধগাছা সাব সেন্টারের স্বাস্থ্য কর্মী রীনা দাস। বর্ধমানের বেড়মোড় এলাকার বংপুরের বাসিন্দা তিনি।এদিন দুপুরে অফিসের কাজ শেষে স্কুটি নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ে একটি লরি তাকে ধাক্কা মারে। রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন রীনা দেবী। ঘাতক লরির চালক লরি নিয়ে পালাতে গেলেও স্থানীয় লোকেরাই লরিটিকে আটকে দেয়। লরি ফেলেই পালিয়ে যায় চালক ও খালাসি। সাময়িক যানজনের পরিস্থিতি তৈরী হয়। পরে বর্ধমান থানার পুলিশ গিয়ে আহত রীনাকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পলেমপুরের বাসিন্দা হরিনারায়ন ঘোষ বলেন, ‘ব্রিজের উপরে কোন নিয়ন্ত্রন থাকে না গাড়ি গুলোর। দেখারও কেউ নেই। দুদিন আগেই এখানে বাইকে একজন মারা গিয়েছে। আহত হয়েছেন একজন। তারও কয়েকদিন আগে একইভাবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের কোন নজরদারি থাকেনা। সিভিক পলেমপুরের দিকে থাকলেও বর্ধমানের দিকে কোন সিভিক থাকেনা। রাতের দিকে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়।’

স্থানীয় বাসিন্দা অলোক সাহা বলেন, ‘ এতদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছিল, পলেমপুর বাজারের জন্যই ব্রিজের উপর  যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আর তার জন্যই দুর্ঘটনা ঘটছে। এই একমাসে ব্রিজের উপরে তিনজন লোক মারা গেল আট থেকে নয় জন আহত হলো। এখনতো বাজার সরে গিয়েছে। তাহলে এসব কেন হচ্ছে? আসলে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে পুলিশ পলেমপুরের সবজি বাজারের অজুহাত দিচ্ছিল এটা এবারে প্রমান হচ্ছে।’

যদিও পুলিশি নিস্ক্রীয়তার অভিযোগ মানতে চাননি ডিএসপি রাকেশ সিং। তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনজন মারা গিয়েছেন, আহত হয়েছেন এসবই সত্যি। কিন্তু পুলিশ কিছু করছেনা এই অভিযোগ সত্যি নয়। পুলিশের নজরদারি আছেই। তবে এভাবে ধারাবাহিক দুর্ঘটনায় আমরাও বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনে দ্রুত সদরঘাট ব্রিজে আমরা বেশ কিছু ব্যবস্থা চালু করতে চলেছি। আমাদের সব সময়েই চেষ্টা থাকে যানজট এড়িয়ে যাতে সুস্থভাবে মানুষ যেতে পারেন।’

আরো পড়ুন