গাড়ি বিক্রির নামে পুলিশ পরিচয় দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেবার চক্রের ৩ প্রতারক গ্রেপ্তার

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: সোশ্যাল মিডিয়ায় সস্তায় গাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়ার বাসিন্দা শঙ্কর সাহা বর্ধমানে গাড়ি কিনতে এসে প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে ২লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা খুইয়েছিলেন। কোনো রকমে প্রাণে বেঁচে ফিরে বর্ধমান থানায় গোটা ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। আর সেই অভিযোগের তদন্তে নেমে চার দিনের মধ্যে পুলিশ সেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তিন দুষ্কৃতিকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতরা সকলেই বর্ধমানের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে তাদের মধ্যে একজনের বাড়ি শহরের মিরছোবা এলাকায়। নাম চন্দন পণ্ডিত। অন্য দুই ধৃতরা হল চৈত্রপুরের বাসিন্দা স্বরাজ ঘোষ ও হ্যাচারি রোড এলাকার বাসিন্দা সৌরভ ঘোষ। এই দুজন সম্পর্কে দাদা ভাই।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে স্বরাজ ঘোষ ওএলএক্স অ্যাপে এই গাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। সেই বিজ্ঞাপন দেখে শঙ্কর সাহা গাড়ি কেনার ব্যাপারে একাধিকবার ফোন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ১৭মার্চ টাকা নিয়ে বর্ধমানের উল্লাস মোড়ে আসার জন্য বলা হয়েছিল শঙ্কর বাবুকে। সেইমত তিনি আসলে তাকে নিয়ে চন্দন পণ্ডিত ও স্বরাজ ঘোষ একটি চারচাকা গাড়িতে করে প্যামরা খালপারের দিকে একটু নির্জন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাস্তায় অন্য দুই ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ছিল। তারা পুলিশ পরিচয় দিয়ে গাড়ির কাগজপত্র সার্চ করার নামে শঙ্কর বাবুর কাছে থাকা টাকার ব্যাগ হাতিয়ে নেয়। তাকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয়ও দেখায় বলে অভিযোগ। এরপর শঙ্কর সাহা কে সেখানেই ছেড়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায় চন্দন ও স্বরাজ।

বর্ধমান থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। যে চারচাকা গাড়িটি এই প্রতারণার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল সেটির সন্ধান পায় পুলিশ। সেই সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে গাড়িটি বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের এক বাসিন্দার। এরপর গাড়ির মালিক কে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে গাড়ি ভাড়া করেছিল সেই চন্দন পণ্ডিতের খোঁজ পায় পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। এরপর চন্দনকে জেরা করে স্বরাজ ঘোষ ও তার ভাই সৌরভ ঘোষের ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সৌরভ ঘোষের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া দু লক্ষ টাকার মধ্যে ২০হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় যুক্ত আরো দুজনের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

ধৃতদের বুধবার বর্ধমান আদালতে পেশ করে টিআই প্যারেডের আবেদন জানায় পুলিশ। প্রতারিত শঙ্কর সাহা জানিয়েছেন, পুলিশ খুব ভাল কাজ করেছেন। মাত্র চার দিনের মধ্যে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে পেরেছে জেনে ভাল লাগছে। এখন আমার দু লক্ষ টাকা উদ্ধার করে দিলে খুব উপকার হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে এই ঘটনায় যুক্ত বাকিদের গ্রেপ্তার করা হবে। তাদের কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হবে। পাশাপাশি দেখা হবে রাজ্যের আর কোথায় কোথায় এই চক্র প্রতরণা চালিয়েছে।

আরো পড়ুন