ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বৃহস্পতিবার ভোট প্রচারের কর্মসূচিতে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ সদলবলে পূর্ব বর্ধমানের কুড়মুন গ্রামে গিয়ে চরম অস্বস্তির মুখোমুখি হলেন। একইসাথে নিজেকে সনাতনী হিন্দু বলে পরিচয় দেওয়া মেদনিপুরের সাংসদ কার্যত অপদস্তও হলেন বলে গ্রামবাসীদের দাবি। এদিন দিলীপ ঘোষ গ্রামের শিবতলার ঈশ্বানেশ্বর মন্দিরে যান পুজোর ঢালি নিয়ে। কার্যত মন্দিরের রীতি রেওয়াজ না জেনেই সদলবলে পুজো দিতে মন্দিরে ঢুকে পড়েন বিজেপি প্রার্থী। কিন্তু দিলীপ ঘোষ মন্দির চত্বর থেকে বেড়িয়ে যেতেই মন্দিরের চাতাল রীতিমত জল দিয়ে ধোয়ার কাজ শুরু করে দেয় গ্রামের মানুষ। গ্রামবাসীদের দাবি, রীতি না মেনে দিলীপ বাবু যে কাজ করেছেন তাতে মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে। তাই জল দিয়ে মন্দির প্রাঙ্গন ধুয়ে ফেলা হয়েছে।
মন্দিরের সেবাইত প্রসেনজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের মন্দিরের ভিতরে অর্থাৎ গর্ভগৃহে সাধারণের ঢোকা বারণ। একমাত্র পুরোহিত ছাড়া কেউ ঢুকতে পারেন না। কিন্তু দিলীপ ঘোষ লোকজন নিয়ে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করেছেন। এটা মন্দিরের রীতি বহির্ভূত কাজ। তাই জল দিয়ে মন্দির ধুয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুরোহিতের উচিত ছিল ওনাদের মন্দিরের ভিতরে ঢুকতে মানা করা। আর দিলীপ ঘোষেরও উচিত ছিল মন্দিরে ঢোকার আগে জিজ্ঞেস করা নেওয়া যে কতটা তিনি যেতে পারবেন। উনি তা না করে লোকজন নিয়ে একেবারে মন্দিরের ভিতরে ঢুকে যান। আমাদের গাজনের সময় সন্ন্যাসীরাও মন্দিরের ভিতরে ঢুকতে পারেন না। তাই মন্দিরের চাতাল জল দিয়ে পরিস্কার করা হল। এই ভাবে মন্দিরে ঢোকা মন্দিরের পবিত্রতা কে অসম্মান করার সামিল। তাই মন্দিরের চাতাল, সিঁড়ি সব জল দিয়ে পরিস্কার করা হয়েছে।’
একই কথা বলেন, আর এক সেবাইত সুজন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘আমাদের মন্দির চত্বরকে পবিত্র রাখতে সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। কাউকেই মন্দিরের ভিতর প্রবেশ করতে দেওয়া হয়না। হঠাৎ কয়েকজন কে সঙ্গে নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করে যান দিলীপ ঘোষ। এটা অনুচিত কাজ করেছেন প্রার্থী। তাই মন্দির ধুয়ে পরিস্কার করা হয়। কিন্তু বিজেপির পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, আদৌ কি বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ মন্দিরের ভিতরে অর্থাৎ গর্ভগৃহে প্রবেশ করেছিলেন। যদিও সেবাইতরা দাবী করছেন, দিলীপ ঘোষ একেবারে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করেছিলেন। বিগ্রহের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি প্রণামও করেছেন।
অন্যদিকে সেবাইত সুজন মণ্ডল বলেন, মন্দিরে জল দিয়ে পরিস্কার করার মধ্যে কোন রাজনীতি নেই। এটাই এই মন্দিরের সংস্কার, পরম্পরা। তবে আজকের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত কিন্তু পরিস্কার। গোটা বিষয়টিতেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে শাসক – বিরোধী রাজনীতির গন্ধ পাওয়া গেছে। আছে বিজেপি বনাম তৃণমূলও। মুখে না বললেও বা দলের পতাকা না থাকলেও এলাকায় শাসক ও বিরোধীদের অবস্থান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এদিনের ঘটনায়।