ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: অন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষি সংক্রান্ত সফটওয়্যার তৈরি করে পুরস্কৃত হলেন বর্ধমানের যুবক। তার তৈরি এই সফটওয়্যার সহজেই চাষ সংক্রান্ত বিষয়ে নানান তথ্য প্রদান করতে সহায়তা করবে। সারা বিশ্বের প্রতিযোগীদের মধ্যে থেকে বর্ধমানের অয়নের এই সফটওয়্যার বেছে নেওয়া হয়েছে। এই কাজের জন্য অন্তর্জাতিক স্তরে পুরস্কৃতও করা হয়েছে তাঁকে।
বর্ধমান শহরে ১নং ওয়ার্ডের কাঁটাপুকুর এলাকার বাসিন্দা অয়ন ঘোষ ইলেকট্রনিক্স কমিউনিকেশন নিয়ে স্নাতক করেছেন। বর্ধমানের ইউআইটি কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছে সে।
বর্তমানে তিনি একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত রয়েছেন। চলতি বছরে নভেম্বর মাসে বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে অন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। সারা বিশ্বের ১৮০টি দেশ থেকে প্রায় ২০হাজার প্রতিযোগী অনলাইন মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। অয়ন এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বে প্রথম হয়েছে।
অয়ন জানিয়েছে, এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে বিশ্ব উষ্ণায়ন, খাদ্য সংকটের মতো বিষয়গুলির স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার কিভাবে করা যায় সেটাই ছিল মূল লক্ষ্য। বর্ধমানের অয়ন এই বিষয় গুলির মধ্যে বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে কৃষির উপর প্রভাব নিয়ে কাজ করেন। তিনি ভারতীয় আবহওয়ায় চাষের সুবিধার্থে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছেন। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে চাষীরা নিজেদের এলাকায় আবহওয়ার বিষয়ে অগ্রিম জানতে পারবেন।
এছাড়া, কোন মাটিতে কি ধরণের ফসল উপযোগী হবে ও ফলনের ক্ষেত্রে কি কি করণীয় সেই বিষয়েও জানতে পারবেন। শুধু তাই নয় উৎপাদিত ফসল অনলাইন মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন চাষীরা। বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া তথ্য থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের মাধ্যমে এই সফটওয়্যার চাষীদের সঠিক তথ্য প্রদানে সক্ষম হবে। সারা বিশ্বের ২০ হাজার প্রতিযোগির মধ্যে তার এই সফটওয়্যার বেছে নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে এই সফটওয়্যারের প্রয়োগ দেখা যাবে। এই কাজের জন্য প্রতিযোগিতা আয়োজনকারী সংস্থার পক্ষ থেকে অয়নকে ইতিমধ্যেই পুরস্কৃত করা হয়েছে।
অয়ন জানান, ছোট থেকেই নানান বিষয়ে বিজ্ঞানের প্রযুক্তি প্রয়োগের শখ রয়েছে তার। এর আগেও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি করেছে সে। আন্তর্জাতিক স্তরে এই প্রতিযোগিতার কথা জানতে পেরে এটাতে অংশগ্রহণ করেন অয়ন। ভারতীয় উপমহাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিগত কয়েক বছর ধরে চাষের ক্ষেত্রে বিশাল প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। অনেক সময়ই জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে চাষ নষ্ট হয়েছে। আবহাওয়া সংক্রান্ত বিষয়ে আগাম পরিস্থিতির কথা জানা থাকলে চাষীদের এক্ষেত্রে সুবিধা হবে। এই চিন্তা থেকেই এই ধরনের সফটওয়্যার তৈরির কথা তার মাথায় আসে। আগাম ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে উন্নততর চাষের ব্যবস্থা ও খাদ্য সংকটের মোকাবিলা করার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব, তাই চাষীদের সুবিধার্থে এই ধরনের সফটওয়্যার তৈরি করেছেন তিনি। অয়ন বলেন, “আগামী দিনে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। এই প্রযুক্তি আরো উন্নত ভাবে কিভাবে ব্যবহার করা সম্ভব সেই বিষয়ে কাজ করার লক্ষ্য রয়েছে তার।”