বালি পাচারের ভুয়ো চালানে বিশ্ববাংলার লোগো, মুম্বাই থেকে গ্রেপ্তার চক্রের পান্ডা

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বিশ্ব বাংলার লোগো ছাপিয়ে ভুয়ো চালান তৈরি করে চলছিল বালি পরিবহন। পরিবহন দপ্তরের অভিযানে বিষয়টি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্যের সমস্ত জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই রাজ্য থেকে সমস্ত জেলাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরিবহন দপ্তরের পক্ষ থেকে পুলিশকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডুপ্লিকেট চালান নিয়ে যাওয়া বালির গাড়ির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

বিজ্ঞাপন

পরিবহন দপ্তর সূত্রে খবর, এই ডুপ্লিকেট বিশ্ববাংলা লোগো বসানো প্যাড বানানোর মূল পান্ডা কে মুম্বাই থেকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশ। ধৃত ব্যক্তির বাড়ি বসিরহাটে। সূত্রের খবর এই ডুপ্লিকেট প্যাড ধৃত ব্যক্তি ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে এক বালি মাফিয়া হাতে তুলে দেয়। বালি মাফিয়া কে ওই ব্যক্তি জানায় যে এই প্যাড দেখালে কোন জায়গায় পরিবহন দপ্তর তথা পুলিশের তরফ থেকে তাদের গাড়ি আটকাবে না। এদিকে ভুয়ো বালির চালান তৈরির চক্রের সঙ্গে আরো কারা যুক্ত আছে সে ব্যাপারে জোরদার তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এই কারবারের মুল পান্ডা গ্রেফতার হওয়ার পরেই রাজ্য জুড়ে নজরদারি আরো বাড়ানো হয়েছে বলে পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত গত কয়েকদিন ধরে ওভারলোডেড বালির গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। শক্তিগড়ে একটি বালি ভর্তি ওভারলোড ট্রাক কে সন্দেহের কারণে আটকায় পুলিশ। অভিযোগ সেই সময় গাড়ির চালক কর্তব্যরত আধিকারিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে, মেজাজ দেখায়। তার কাছে বালি পরিবহনের অনুমতি সহ কাগজ আছে দাবি করে চালক বিশ্ববাংলা লোগো দেওয়া ওই কুপন দেখায়। দেখা যায় সেই কুপনের উপরে ‘ওয়েষ্ট বেঙ্গল পরিবহন ডিপার্টমেন্ট সুরক্ষা কমিটি’ লেখা আছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এরপরই এই কুপনের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায় গোটাটাই ভুয়ো। এমন কোনো কুপন সরকারিভাবে চালু নেই। বিষয়টি পরিবহন দপ্তরের শীর্ষ কর্তাদের জানানো হয়। আশেপাশের জেলাকেও সতর্ক করা দেওয়া হয়। জানা গেছে, বীরভূমের ইলামবাজার থেকে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে কলকাতা যাচ্ছিল ওই বালির গাড়িটি। ফলে বীরভূম সহ অন্যান্য জেলার সব থানাকেও সতর্ক করা হয়েছে।

এদিকে খোদ রাজ্য সরকারের অফিসিয়াল লোগো ব্যবহার করে বালি পাচারের অভিযোগে সামনে আসতেই রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। বিজেপির বর্ধমান জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা বলেন,’ এই জেলায় শুধু নয়, রাজ্যজুড়ে বালি, কয়লা সব পাচারেই তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ স্পষ্ট হচ্ছে। বালিপাচারের এই দুর্নীতির চক্র চলছে শাসকদলেরই মদতে।’ পূর্ব বর্ধমান জেলা কংগ্রেসের নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, ‘ এই রাজ্য সরকারের পুরোটাই দুর্নীতিতে ভরা। পিসি ভাইপোর রাজত্বে দুর্নীতিই এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ অন্যদিকে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘ সরকার এই ধরণের কুপন ছাপায় না। বালি পরিবহনের জন্য নির্দিষ্ট সরকারি নিয়ম রয়েছে। সরকারকে বদনাম করার জন্য বিজেপির লোকজন এই কারবারে যুক্ত। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।’

আরো পড়ুন