ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,কালনা: হরিনাম সংকীর্তনের জন্য বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে এক তৃণমূলের সক্রিয় কর্মীকে খুন করার অভিযোগ উঠলো বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কালনা থানার বৈদ্যপুর আটকেটিয়া, বুড়ো শিবতলা এলাকায়। মৃত ব্যক্তির নাম দয়াল হাজরা। অভিযুক্তের নাম কৃষ্ণচন্দ্র হাতি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত কৃষ্ণচন্দ্র হাতিকে গ্রেপ্তার করেছে। খুনের ঘটনার পর এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার সূত্রপাত গতকাল রাত্রি ৮টা নাগাদ। বৈদ্যপুর আটকেটিয়া বুড়ো শিবতলায় হরিনাম কীর্তন হবে বলে স্থানীয় বিজেপি কর্মী কৃষ্ণচন্দ্র হাতি একই এলাকার বাসিন্দা ভাল খোল বাজিয়ে এবং সক্রিয় তৃণমূল কর্মী দয়াল হাজরা কে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসে। অভিযোগ এরপর বিড়ি খাওয়ানোর নাম করে পাশে একটা অন্ধকার জায়গায় কৃষ্ণচন্দ্র ও আরো কয়েকজন দয়াল কে ডেকে নিয়ে যায়। অভিযোগ সেখানেই দয়ালের গলায় রাখা গামছা দিয়েই তার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে কৃষ্ণচন্দ্র ও তার সঙ্গীরা। দয়ালের আর্তনাদ শুনতে পেয়ে শিবতলা থেকে স্থানীয়রা ছুটে গেলে কৃষ্ণচন্দ্র পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। তাকে ধরে ফেলেন স্থানীয় লোকজন। একটি পোলে বেঁধে রেখে পুলিশ কে খবর দেওয়া হয়। দয়াল হাজরা কে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ পৌঁছে অভিযুক্ত কৃষ্ণচন্দ্র হাতিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে কালনা থানার পুলিশ। এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরী হয়।
কালনা ২ব্লক তৃণমূলের সভাপতি প্রণব রায় বলেন, ” বিজেপি গোটা রাজ্য কে অশান্ত করার প্রয়াস চালাচ্ছে। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রতিবাদে ২৭তারিখ স্থানীয় শিরীষতলায় একটি পথসভা থেকে বিজেপির নেতারা মারাত্মক উত্তেজনা মূলক বক্তব্য রাখে। এমনকি সভা মঞ্চ থেকেই তৃণমূল কর্মীদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। আর এর পরই গতকাল আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী দয়াল হাজরা কে বাড়ি থেকে ডেকে এনে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে। এর আগেও বিধানসভা নির্বাচনের সময় এই দয়াল কে বার তিনেক প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল এই কৃষ্ণচন্দ্র হাতি ও তার দলবলের লোকেরা।”
এদিকে এই খুনের ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনো সম্পর্ক নেই বলেই স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে। বিজেপির মন্ডল সভাপতি পার্থপ্রতিম তা জানিয়েছেন, ‘এই এলাকায় বিজেপির কোনো সংগঠন বর্তমানে নেই। এমনকি গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় যে আমাদের দলের বুথ সভাপতি ছিলেন সেই বিকাশ রানা ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসে জয়েন করেছে। আর যার নামে এই খুনের অভিযোগ এনে বিজেপিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে সেই কৃষ্ণচন্দ্র হাতি ২০২১এর ২মে র পর থেকে দলের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। সুতরাং এই খুনের সঙ্গে বিজেপির কেউ যুক্ত নয়। পুলিশ ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের সাজা দিক। বিজেপি কোনো মৃত্যুরই সমর্থন করে না।’