ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্যে এবার এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করলো বর্ধমান বিভাগীয় বনদপ্তর। আগামী ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে পূর্ব বর্ধমান জেলার সেকেন্ডারি ও প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র ছাত্রী সহ শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিনামূল্যে বর্ধমান রমনা বাগান জুলোজিক্যাল পার্কে ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
মূলত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা তৈরি করা ও দায়িত্ববান তৈরি করার উদ্দেশ্যে এই শিক্ষামূলক ভ্রমণের আয়োজন করা হয়েছে বলে বিভাগীয় বনাধিকারিক সঞ্চিতা শর্মা জানিয়েছেন। এরফলে প্রকৃতির মাঝে অজস্র গাছগাছালি সম্মন্ধে যেমন জ্ঞানার্জন করতে পারবে তারা, তেমনই পশু পাখিদের আচরণ, স্বভাব সম্বন্ধেও জানতে পারবে পড়ুয়ারা। তিনি জানিয়েছেন, এই উদ্যোগ এবছরই প্রথম নেওয়া হয়েছে। ২৬জানুয়ারি পড়ুয়াদের গাইড করার জন্য বনদপ্তরের আধিকারিকরাও সঙ্গে থাকবেন। তারাই সমস্ত কিছু ঘুরিয়ে দেখাবেন। প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র, ওয়াচ টাওয়ার, কয়েকশো কোটি বছরের পুরনো গাছের জীবাশ্ম( ফসিল ) সহ নানান প্রজাতির গাছ ও পশু পাখি সম্মন্ধে পড়ুয়াদের গাইড করবেন বন দপ্তরের কর্মী, আধিকারিকরা।
ইতিমধ্যে বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক কে চিঠি দিয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। সেইমতো বেশ কিছু স্কুল ইতিমধ্যেই এই আকর্ষণীয় সুযোগ কে কাজে লাগাতে ইচ্ছা প্রকাশ করে তাদের ছাত্রছাত্রীর ও শিক্ষকের সংখ্যা উল্লেখ করে শিক্ষামূলক ভ্রমণের বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে। পাশাপাশি আরও স্কুল ২৬ জানুয়ারি রমনাবাগান পার্কে আসবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন বনাধিকারিক। তিনি জানান, সমস্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ কে আগামী ২২জানুয়ারির মধ্যে অবশ্যই আবেদন জানাতে হবে।
বনাধিকারিক সঞ্চিতা শর্মা ফোকাস বেঙ্গল এর প্রতিনিধি কে রমনাবাগান জুলোজিক্যাল পার্ক নিয়ে আগামী একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জনের জন্য রমনাবাগানের আকর্ষণ বাড়াতে চলতি বছরের মার্চ মাসের মধ্যে নতুন ও বর্তমানে জু–এ রয়েছে এমন পশু পাখি ধাপে ধাপে নিয়ে আসা হবে। তার মধ্যে যেমন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে, তেমনই জিরাফ, হরিণ সহ একাধিক পশু নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। এবিষয়ে ইতিমধ্যেই প্রপোজাল দিল্লি পাঠানো হয়েছে। আগামী মাসে কেন্দ্র সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে ফের যোগাযোগ করা হবে। তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন খুব শীঘ্রই এবিষয়ে অনুমোদন পাওয়া যাবে। আর তারপরই পরিকাঠামোগত কাজ শেষ করে নতুন অতিথিদের নিয়ে আসা শুরু হবে। তিনি জানিয়েছেন, এখানে জায়গায় অভাব নেই, শুধু অর্থ অনুমোদন হলেই দ্রুত এনক্লোজার তৈরির কাজ শেষ করা হবে।
বনাধিকারিক জানিয়েছেন, ফরেস্টের মধ্যে একটি ফুড কোর্টের যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, সেটি পরিবর্তন করে রমনা বাগানের মূল প্রবেশ দ্বারের বাইরে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ দর্শনার্থীদের কোলাহলে যাতে বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক গতিবিধি বিঘ্নিত না হয় তার দিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে এই ব্যাপারেও অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বন দপ্তর। তিনি জানিয়েছেন, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে রমনাবাগান জুলোজিক্যাল পার্ক কে সাজিয়ে তুলতে এবং আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে সংশ্লিষ্ট সমস্ত দপ্তরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।