স্বাস্থ্য

বিরল ঘটনার সাক্ষী বর্ধমান মেডিকেল, ২৪ ঘণ্টায় জন্ম নিলো ৯ জোড়া শিশু

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: কাকতলীয় হলেও অবাক করার মতো ঘটনার সাক্ষী থাকলো বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসকেরা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৯ জন মায়ের ৯ জোড়া যমজ শিশুর জন্ম হয়েছে। এর আগে কোনো হাসপাতালে বা কোথাও এমনটা ঘটেছে বলে কোনো নজির কেউ মনে করতে পারছেন না। জন্ম নেওয়া ১৮ টি শিশুর মধ্যে ১১ টি কন্যা। বাকি ৭টি পুত্র সন্তান। আপাতত মা এবং শিশু সবাই সুস্থ বলে মেডিক্যালের স্ত্রী এবং প্রসূতি বিভাগ সূত্রে জানানো হয়েছে।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ সুত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার হাসপাতালের বহির্বিভাগের উপরে থাকা স্ত্রী এবং প্রসূতি বিভাগে এই ‘বিরল’ ঘটনা ঘটে। এখানেই নয়জন মা সারাদিনের মধ্যে যমজ বাচ্ছার জন্ম দেন। আরও উল্লেখযোগ্য এই ১৮টি বাচ্ছার মধ্যে ১১টি কন্যা সন্তান। শিশুগুলির মধ্যে ৫টি শিশুর ওজন সামান্য কম থাকায় তাঁদের বিশেষ যত্ন নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের ‘নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট’ (এন আই সি ইউ) রাখা হয়েছে। যদিও সব শিশুই সুস্থ এবং তাঁরা বিপদমুক্ত। বাচ্ছা জন্ম দেওয়া মায়েরাও সুস্থ আছেন। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, একদিনে এতগুলি যমজ বাচ্ছার জন্ম আগে হয়নি এই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে।

বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ জানান, ‘সব মা ও শিশুরাই সুস্থ আছেন। চারজনের ওজন কম থাকায় তাদের এন আই সি ইউতে রাখা আছে। তারাও ভাল আছে। তিনি আরো জানান, হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারদের সাথে হাত মিলিয়ে এই চাপ সামলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তিনি আরও জানান, জমজ শিশুর জন্ম সব সময় ঝুঁকিপূর্ণ। সেজন্য সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

এদিকে এই হাসপাতালের প্রসুতি বিভাগের প্রধান মলয় সরকার জানান, ‘রেফারেল হাসপাতাল হওয়ায় অনেক ঝুঁকিপূর্ণ প্রসব করাতে হয় এখানে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ৮০ জনের মধ্যে একটি জমজ শিশু জন্মায়। এক্ষেত্রে একটি ছাড়া সব প্রসব হয়েছে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে। তিনি জানান, চিকিৎসক, অজ্ঞান করার ডাক্তার, জুনিয়র ডাক্তার, নার্স সহ অন্যান্য কর্মীরা দারুনভাবে এই চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন।’

আর এক চিকিৎসক ডা: সুপ্রতিক বসু জানান, ২ কেজি থেকে ২ কেজি ২০০ ওজন রয়েছে সদ্যোজাতদের। এদের বাবা মায়েদের বাড়ি বাঁকুড়া, হুগলি, নদীয়া। একজনের বাড়ি ঝাড়্গ্রামে। দুটি পরিবারের বাড়ি পূর্ব বর্ধমান জেলায়। বর্ধমানের কাইতির বাসিন্দা কৃষ্ণা নায়েক। তার পরিবারে জোড়া কন্যা জন্মেছে। নাম দিয়েছেন লক্ষ্মী আর সরস্বতী। এক প্রসূতির আত্মীয়া শিখা সাঁতরা জানান, তার ভাগ্নীরও জমজ শিশু জন্মেছে।  দুই প্রসুতির আত্মীয়াই জানান, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা খুব ভাল। ডাক্তারবাবুরা খুব আন্তরিক।