---Advertisement---

বড়দিনে সান্তার উপহারের আশায় আজও অপেক্ষা করে শিশুরা, কে এই স্যান্টা?

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ওয়েব ডেস্ক: যিশু খ্রিস্টের (Jesus Christ) জন্মদিন মানেই আনন্দের উৎসব। সব বিষাদ ভুলে একে- অপরের মুখে হাসি ফোটাতে চান সকলেই। আর একদিন পরই ২৫ শে ডিসেম্বর। বড়দিন। মানব ত্রাতা যীশু খ্রীষ্ট এই দিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁকে স্মরণ করেই এই দিনটি পালিত হয়ে আসছে বিশ্বব্যাপী, ভারতবর্ষেও। ঈশ্বরের পুত্র যীশু সৌভ্রাতৃত্ব আর ভালোবাসার বন্ধন সুদৃঢ় করবার জন্য তার সমগ্র জীবন জুড়ে প্রচেষ্টা করে গিয়েছেন, এমনকি নিজে আত্ম বলিদান দিতেও পিছপা হন নি। মৃত্যুর সময়য়েও তিনি তাঁর শত্রুদের ক্ষমা করেছেন, যারা তাঁকে ক্রশবিদ্ধ করেছিলো, তাদের জন্যও ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চেয়ে ভালোবাসার বাণী প্রচার করে গিয়েছেন। বেথেলহেম নগরের এক গো শালায় কুমারী মা মেরির গর্ভে আবির্ভূত হয়েছিলেন যীশু। তার এই শুভ আবির্ভাব তিথিই বড়দিন হিসেবে পালিত হয় সারা পৃথিবী জুড়ে।

বিজ্ঞাপন

বড়দিনের দিনে বাড়ি কে সাজিয়ে তোলা হয় আলো দিয়ে। কেক, পেস্ট্রি নিয়ে আসা হয়। ক্রিসমাস ট্রি তৈরি করা হয়। আর বাড়ির ছোটদের সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য মোজা ঝুলিয়ে রেখে অপেক্ষা করা হয়। কারণ সবার অলক্ষ্যে নাকি সান্তা আসবে তাদের কাঙ্ক্ষিত উপহার নিয়ে। সাদা দাড়ি, লাল সাদা টুপি, লাল পোশাক, আর তার সঙ্গে কাঁধে মস্ত বড় একটা ঝোলা নিয়ে সকলকে উপহার দিতে পাড়ি দেন সান্তা বুড়ো ওরফে সকলের প্রিয় সান্তা ক্লজ। কিন্তু কে এই স্যান্টাক্লজ? কোত্থেকে এলো বড়দিনের সান্তার উপহার দেওয়ার ধারনা?

কথিত আছে, চতুর্থ শতাব্দীতে তুরস্কে (এশিয়ার মাইনরে) সেন্ট নিকোলাস বা স্যান্টাক্লজ নামের একজন দয়ালু ব্যক্তি বাস করতেন। খুব ছোটতে তাঁর বাবা মা মারা গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি যখন ধনী হয়ে ওঠেন তখন গোপনে সবসময় তিনি গরীবদের সহায়তা করতেন। তিনি সাহায্য করতেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর নাম প্রচার হোক তা তিনি চাইতেন না। তাই রাতের অন্ধকারে গরীবদের বাড়িতে তাদের জন্য উপহার রেখে চলে আসতেন। একদিন তিনি জানতে পেরেছিলেন একজন গরীব মানুষের তিন কন্যা আছে, কিন্তু টাকার অভাবে তিনি তাদের বিয়ে দিতে পারছেন না। সেই গরিব মানুষের কথা শোনা মাত্রই তিনি ঠিক করেন যে তাকে তিনি গোপনে সাহায্য করবেন। কিন্তু এইবার আর তার এই মহানুভবতার পরিচয় গোপন থাকে না।

See also  জেলায় টিনএজ প্রেগনেন্সি বাড়ছে, উদ্বেগ প্রকাশ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের

ওই কন্যাদায়গ্রস্ত গরিব মানুষটি মোজা শুকোতে দিয়েছিলেন বাড়ির বাইরে চিমনিতে। হঠাৎ তিনি দেখেন সেই মোজা থেকেই ঘরের মধ্যে সোনায় ভরা ব্যাগ পড়েছে, তাও আবার একবার নয় তিন তিনবার। শেষেরবার ওই ব্যক্তি নিকোলাসকে দেখতে পেয়েছিলেন। এরপর থেকেই কেউ কোন গোপন উপহার পেলেই ভাবতেন সেটা সেন্ট নিকোলাস অর্থাৎ স্যান্টাক্লজ দিয়ে গেছেন। এই গল্প ধীরে ধীরে জনমানসে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে। প্রসঙ্গত ক্রিসমাসে বাচ্চাদের উপহার দেওয়ার রীতির প্রচলন ছিলো ইউরোপে। সেখানে নিকোলাস হয়ে উঠলেন সেন্ট নিকোলাস বা ফাদার নিকোলাস। বরফ ঢাকা মেরু প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিনের আগের রাতে স্লেজ গাড়ি চেপে পৌঁছে যেতেন ঘরে ঘরে এবং উপহার দিয়ে আসতেন খুদেদের।সেই স্লেজ টানে বল্গা হরিণ। উপহারের পাশাপাশি তিনি মনোবাঞ্ছাও পূরণ করেন সকলের। তাই ২৪ ডিসেম্বর রাতে মোজা ঝুলিয়ে রাখা হয়, সেন্ট নিকোলাস বা সান্তাক্লজের থেকে বিশেষ দিনে উপহার পাওয়ার আশায়।

আবার এও কথিত আছে, কানাডার মুস্কোকা গ্রামকে বলা হয় সকলের প্রিয় সান্তাক্লজের বাড়ি। সেখনে সান্তার নামে একটি মেইলিং পোস্ট তৈরি করা হয়েছিল। যেখানে আজও লক্ষ লক্ষ চিঠি পৌছায়। এই ডাকের কোডটি হল,’ H0H0H0’। সেই থেকেই মনে করা হয়, সান্টা ‘হোহোহো’ করে হেসে উপহার দেবেন ২৪ ডিসেম্বর রাতে।

এরপর থেকেই বড়দিনের আগের রাতে সব খুদেরা মোজা ঝুলিয়ে রাখতে শুরু করলো স্যান্টাক্লজের কাছ থেকে উপহারের আশায়। সময় পাল্টালো, দিন পাল্টালো কিন্তু স্যান্টাক্লজের ধারণা পাল্টালো না। আজ‌ও খুদেরা বড়দিনের আগে ২৪ডিসেম্বর রাতে মোজা ঝুলিয়ে রাখেন বাড়ির উঠোনে। যদিও খুদে সন্তানদের ভাবনার স্যান্টা আজ হয়ে উঠেছেন তাদেরই বাবা, মা। ছোট্ট শিশুর মুখে হাসি দেখবার জন্য তারাই রাতের অন্ধকারে ‘জাদু’ মোজার মধ্যে রেখে আসেন তাদের শিশুদের পছন্দের উপহার। আর স্যান্টার সেই মানসিকতা আজও ঘরে ঘরে বড়দিনের দিনে বিশ্বজুড়ে বেঁচে আছে শিশুদের পিতা, মাতা দের সংস্কারের মধ্যে দিয়ে।

See also  বর্ধমানের যানজট সমস্যা মোকাবিলায় এবার একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন
শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---