ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে। সোমবার বর্ধমানের স্পন্দন কমপ্লেক্সের মাঠে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস দ্বারা আয়োজিত ইফতার পার্টিতে হাজির বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অনেকেই জানিয়েছেন, এটা নতুন কিছু নয়। বাম আমলেও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উপাচার্য ছিলেন যিনি সিপিআইএম এর হয়ে দেওয়াল লিখতেন। মিছিল মিটিংএ হাঁটতেন। ওনার নাম অমিত মল্লিক। কিন্তু সে তো অনেক দিনের কথা। তা বলে এখনও শাসক দলেরও তাবেদারী করবেন বর্তমান উপাচার্য! আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক কুটকাচালি।
সোমবার বর্ধমানের স্পন্দন কমপ্লেক্সের মাঠে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। জেলা তৃণমূলের নেতৃত্ব ছাড়াও এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বেশ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। আর তাঁদের মধ্যেই ইফতার পার্টির অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতর। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন ঘোষিত একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মঞ্চে উপস্থিত থাকতে পারেন। যদিও উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহাকে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমাকে নিমন্ত্রন জানানো হয়েছিল ইফতার পার্টির অনুষ্ঠান বলে। এটা কোন রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান আমার জানা ছিলো না। ওখানে যাবার পরে সব জেনে আর ফিরে আসার উপায় ছিল না।’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘আসলে বিজেপি আর সিপিএম এখন একই কয়েনের এপিঠ-ওপিঠ। সিপিএমের আমলে শিক্ষা ব্যবস্থায় কিভাবে রাজনীতিকরণ হয়েছিল ৩৪ বছরে মানুষ সেটা জানে। বিজেপিকে বলুন বিশ্বভারতীর উপাচার্য কে আগে অরাজনৈতিক হতে। উনি এসেছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ হিসেবে। পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ রাজ্যবাসী জানেন। আর বাম আমলের উপাচার্যদের কীর্তিকলাপ সম্পর্কে নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। অনেকে তো দলের হয়ে রীতিমত দেওয়াল লিখতো। তবে এদিন মুসলিমদের এই পবিত্র অনুষ্ঠানে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। প্রথাগতভাবে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল। এরমধ্যে কোথাও কোন অন্যায় হয়েছে বলে আমরা মনে করিনা।’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থায় যে রাজনীতিকরণ হয়েছে এটা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আজ যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনে থাকা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে তার কোন সুরাহা না করে উনি এসব করে বেড়াচ্ছেন। আসলে ওনার উপাচার্য হবার তো যোগ্যতাই নেই। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে যেটা করার তারই পরিচয় রেখেছেন।’ বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ বলেন, ‘বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তো নিজের যোগ্যতায় উপাচার্য হননি। উনি তৃণমূলের পদলেহন করেই উপাচার্য হয়েছেন। তাই ওনাকে এভাবে বসতে হয় দলের অনুষ্ঠানে। অনান্য বিশ্ববিদালয়ের উপাচার্যদের তো এভাবে দেখা যায়না।’