ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,গলসি: গলসি ১-ব্লকের পুরসা হাসপাতালের একাধিক জায়গায় বুধবার একটি পোস্টার লাগানো কে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ‘মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ ও রিপোর্টার এর প্রবেশ নিষেধ’ এই ভাষায় লেখা পোস্টারটি কে বা কার নির্দেশে, কি কারণে লাগানো হয়েছে সেই নিয়ে দিনভর চর্চা চলেছে নানান মহলে। যদিও এই বিষয়ে জানতে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কে একাধিকবার ফোন করা হলেও প্রথমে তিনি ফোন তোলেননি। এমনকি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা জয়রাম হেমব্রম কে পোস্টার সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে ফোন করা হলে তিনি জানিয়েছেন, ‘তিনিও ঘটনার বিষয়ে শুনেছেন। কেন এমন পোস্টার দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে জানার জন্য ফোনে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলেও তাঁকে পাচ্ছেন না। তবে সাংবাদিক দের প্রবেশের ক্ষেত্রে কেনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে সেই বিষয়ে জানার পরই তিনি কিছু বলতে পারবেন। তিনি এও জানিয়েছেন, যে পোস্টারটি লাগানো হয়েছে সেটির কোথাও বিএমওএইচ এর স্বাক্ষর নেই। ফলে সামগ্রিক বিষয়টি না জেনে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।’
প্রসঙ্গত গলসি ১-ব্লকের পুরসা হাসপাতাল অবস্থানগত ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ন। গলসি থানার অধীনে প্রচুর গ্রাম রয়েছে যেগুলোর বসবাসকারী মানুষ এই হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়াও এই হাসপাতালের সামনে দিয়েই গেছে ১৯নম্বর জাতীয় সড়ক। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনাজনিত কারণে বহু মানুষকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালেই নিয়ে আসতে হয়। তাছাড়া রাজনৈতিক সংঘর্ষ, ছোটখাটো মারপিট ইত্যাদির কারণে চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালই গলসি এলাকার মানুষের প্রথম ভরসা। সুতরাং সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সবসময় এই হাসপাতালের দিকে নজর রাখতে হয়। ফলে বুধবার আচমকা হাসপাতাল চত্বর জুড়ে খোদ সাংবাদিকদেরই প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পোস্টার লাগানোর ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন মহল থেকে এই পোস্টার নিয়ে নানান তির্যক মন্তব্য উঠে আসে। গনতন্ত্রের মুখ বন্ধ করতে এমন উদ্যোগের নিন্দা জানিয়েছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। কেনো হটাৎ মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ দের সঙ্গে সাংবাদিক দেরও প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা নিয়ে জেলার সাংবাদিক মহলেও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।
যদিও এদিন সন্ধ্যায় খোদ পুরসা হাসপাতালের বিএমওএইচ পায়েল বিশ্বাস এই পোস্টার বিতর্কে জানিয়েছেন, ‘ নোটিশ লাগানোর জন্য বলা হয়েছিল এটা ঠিক, কিন্তু সেটা শুধুমাত্র মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ দের জন্য। কিন্তু বোঝার ভুলে নোটিশে লেখা টা ভুল হয়েছে। হাসপাতালের যে কর্মীরা এই পোস্টার লাগিয়েছে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে। আসলে হাসপাতালের ওপিডি চলাকালীন এম আর দের (Medical Representative ) ভিজিট বন্ধ করতেই এই উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি কোন এক ব্যক্তি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে হাসপাতালের অভ্যন্তরে ঢুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। ওই সাংবাদিকের কাছে কোনো পরিচয়পত্র ছিলনা। কর্মীরা আমায় বিষয়টা জানাতেই আমি তাদের নির্দেশ দিয়েছিলাম, বিনা অনুমতি তে কাউকেই হসপিটালের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যাবে না। কিন্তু নোটিশ দেওয়ার আগে আমায় জানানো হয়নি। বিষয়টা ভুল হয়েছে, ঠিক করে নেওয়া হচ্ছে।’