ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,ভাতার: ভোটের আগে প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে বেড়িয়ে গ্রামবাসীদের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী। এমনকি এলাকার জল কাদা ভর্তি বেহাল রাস্তা দিয়েই বিধায়ক কে হেঁটে যেতে একপ্রকার বাধ্য করেছিলেন ভাতার ব্লকের নিত্যানন্দপুর পঞ্চায়েতের কলুত্তক গ্রামের বাসিন্দারা। এরপরেও বিধায়ক সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে ‘এই ঘটনা কেবলমাত্র তৃণমূল সরকারের আমলেই ঘটতে পারে। মানুষ তাদের সুবিধা অসুবিধার কথা জন প্রতিনিধিদের নিজেদের মতো করে বলতে পারেন। আর আমরা সাধ্যমত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান করে উন্নয়ন কে এগিয়ে নিয়ে চলি।’ এমনকি তিনি বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীদের কথাও দিয়ে এসেছিলেন ভোট মেটার পর পঞ্চায়েত থেকে গ্রামের রাস্তা সারিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তাও যদি না হয় সেক্ষেত্রে তিনি নিজের বিধায়ক তহবিলের টাকা দিয়ে এই রাস্তা সংস্কার করে দেবেন।
কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার পর দেখা গেলো এলাকার বাসিন্দারা বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর মন রাখতে পারলেন না। নিত্যানন্দপুর পঞ্চায়েতের কালুত্তক গ্রামের ৫৯ ও ৬০ নম্বর আসনের দুটি সংসদেই জিতেছেন সিপিএমের প্রার্থীরা। এই জয়ে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা হলেও মন খারাপ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের। প্রসঙ্গত ভাতার ব্লকের নিত্যানন্দপুর পঞ্চায়েতের মোট আসন ২২ টি। এরমধ্যে সিপিএম তিনটি আসনে, বিজেপি ২ আসনে ও কংগ্রেস একটি আসনে জয় পেয়েছে। বাকি ১৬ টি আসনে তৃণমূলের প্রার্থীরা জয়লাভ করে পঞ্চায়েতে তাদের দখলেই রেখেছে।
কালুত্তক গ্রামের ৫৯ নম্বর বুথের সিপিএম প্রার্থী সফিউল আলম জিতেছেন মাত্র পাঁচ ভোটে। তিনি ভোট পেয়েছেন ৪৭৯ টি। সেখানে তৃণমূল প্রার্থী পেয়েছেন ৪৭৬টি ভোট। সফিউল আলম বলেন, ‘দিনের পর দিন তৃণমূলের অত্যাচার, ভয়, হুমকির প্রতিবাদের ফল আমার এই জয়। অনেকেই ভাবছেন আমি হয়তো তৃণমূলে চলে যাবো। আমি মরে যাবো, কিন্তু তৃণমূল হবো না।’ অন্যদিকে ৬০ নম্বর সংসদে সিপিএম প্রার্থী ভোট পেয়েছেন ৩২০। তৃণমূল পেয়েছে ২৬৮টি ভোট। এখানে জয়ের ব্যবধান ৫২টি ভোটের।
এই আসনে সিপিএমের জয়ী প্রার্থী জাফরআলি মল্লিক বলেন, ‘ অবাধে ছাপ্পা না হলে এই পঞ্চায়েত আমরা জিততাম।’ বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারি বলেন, ‘ বিরোধীরা ৬টা আসন জিতেছে। ছাপ্পা হলে বিরোধীরা কি একটা আসনও পেতো নাকি? জেতার পরেও যারা ছাপ্পার কথা বলে তাহলে একটা বিষয় পরিস্কার ভোট সুষ্ঠুভাবে, নিরপেক্ষ ভাবেই হয়েছে।’
বিরোধীরা জেতায় তাহলে কি থমকে গেলো রাস্তার উন্নয়ণের কাজ? এই প্রশ্নের উত্তরে বিধায়ক বলেন, ‘ উন্নয়নের প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বিরোধী দেখেন না। লক্ষ্মী ভান্ডার, সবুজ সাথি থেকে বিনা পয়সার রেশন রাজ্যের প্রতিটি মানুষ পাচ্ছেন। আমি কথা দিয়েছিলাম পঞ্চায়েত থেকে ওই রাস্তা ঠিক করে দেবে, নাহলে আমি আমার তহবিলের টাকা দিয়ে গ্রামের মানুষের সুবিধার জন্য রাস্তা করে দেবো। ভোটে জেতা হারার সঙ্গে উন্নয়নের কাজের কোন সম্পর্ক নেই। মানুষের জন্যে কাজ করাটাই আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য।’