---Advertisement---

পরিবেশ আইন কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দামোদর নদে দৈত্যকায় মেশিন নামিয়ে চলছে দেদার বালি উত্তোলন, প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বাঁকুড়া ও গলসি: পরিবেশ আইন কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দামোদর নদের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অবৈধভাবে দৈত্যকায় একাধিক মেশিন দিয়ে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চলছে বালি উত্তোলন। সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত বালি ঘাটের ইজারাদার হওয়া সত্ত্বেও নদীর নির্দিষ্ট যে অংশ থেকে বালি তোলার অনুমোদন রয়েছে, অভিযোগ সেই জায়গার বাইরে বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে বালি তুলে বিক্রি করছে ইজারাদার। বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়র থানার অন্তর্গত দামোদর নদের টাসুলি, খাঁ পাড়া, দেউলপাড়া প্রভৃতি মৌজা থেকে তথাকথিত এক প্রভাবশালী ইজারাদার এই বেআইনি বালি খনন করছে বলে অভিযোগ।

বিজ্ঞাপন

 

অভিযোগ, দিনের পর দিন বেআইনি ভাবে এই বালি তোলার কাজ চললেও বাঁকুড়া ভূমি রাজস্ব আধিকারিক বা পাত্রসায়র ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিক কিংবা পুলিশ এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ করছে না। পরিবেশ আইন (National Green Tribunal) অনুসারে নদীতে কোন ভারী মেশিন নামিয়ে খনন করা যায়না। এমনকি নদী গর্ভে কোন ধরনের গাড়ি ( ইঞ্জিন) চলাচলেরও অনুমোদন নেই। তাসত্ত্বেও টাসুলি ও খাঁপাড়া মৌজায় একাধিক দৈত্যকায় মেশিন নদীর বুকে নামিয়ে নদীর গভীর থেকে বালি তোলা চলছে বলে অভিযোগ। বাঁকুড়া জেলার অধীনে বালি তুললেও প্রতিদিন কয়েকশো বালি বোঝাই ডাম্পার পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি থানার অন্তর্গত শিল্লা–পারাজ এবং গোহগ্রাম–গলসি রাস্তা ব্যবহার করে রাজ্য সহ অন্যত্র বিক্রির জন্য যাতায়াত করছে।

এই দুই রাস্তার পার্শ্ববর্তী এলাকার একাধিক গ্রামের মানুষের অভিযোগ, নদী থেকে বালি তুলে সদ্য তৈরি হওয়া নতুন রাস্তা দিয়ে শয়ে শয়ে বালির গাড়ি যাতায়াতের ফলে ফের রাস্তার হাল খারাপ হতে শুরু করেছে। অনেকেরই অভিযোগ, বালির গাড়ি থেকে রাস্তায় জল পড়ে রাস্তার অবস্থা খারাপ হচ্ছে। পরিবেশ দপ্তরের দেওয়া ছাড়পত্রে ( Environmental Clearance) পরিষ্কার নির্দেশ রয়েছে, নদী থেকে তোলা বালি থেকে জল ঝরিয়ে তবেই রাস্তা দিয়ে গাড়িতে নিয়ে যাওয়া যাবে। গলসি থানার পুলিশ বা ভূমি দপ্তরেরও এবিষয়ে কোনো হেলদোল নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসীদের অনেকেই।

See also  মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে বাড়ি ফেরালো গলসী থানার পুলিশ

গলসির শিল্ল্যা এলাকার বাসিন্দা দীনবন্ধু দাস বৈরাগ্য অভিযোগ করেছেন, ’মহামান্য উচ্চ আদালতে দেউলপাড়া, টাসুলি ও খাঁপাড়া মৌজার দামোদর নদের প্রায় ৭৪ একর জায়গা নিয়ে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তার মধ্যে টাসুলি তে ২০ একর, দেউলপাড়া মৌজায় ৩৪ একর এবং খাঁপাড়ায় ২০একর জায়গা রয়েছে তার অধীনে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্লটে বালি উত্তোলনের জন্য আদালত ইতিমধ্যে তার পক্ষে রায় দিয়েছে। কিন্তু বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের অনুমোদিত এক ইজারাদার নিজের এলাকায় বালি না কেটে এই সমস্ত মৌজা থেকে বেআইনি ভাবে বালি কেটে ব্যবসা করছে।

এমনকি নদীর মধ্যে ভারী মেশিন নামিয়ে নদীর গভীর থেকে বালি তুলে ফেলছে। গত বছর তাসুলি মৌজার যে অংশ থেকে এই ইজারাদার বালি তুলেছিলো, হঠাৎ করে এই বছর সেই জায়গা ছেড়ে দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার এগিয়ে এসে নদীর মাঝ বরাবর খাঁ পাড়া, টাসুলি মৌজা থেকে দেদার বালি কেটে চলেছে। রীতিমত উচ্চ আদালতের নির্দেশ কে অমান্য করে চলছে বালি উত্তোলন, যেটা সরাসরি বেআইনি। এব্যাপারে একাধিকবার বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন, পুলিশ সহ গলসি থানাতেও অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এই বেআইনি কারবার বন্ধ হয়নি। এবার উচ্চ আদালতে রায় কে হাতিয়ার করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবো।’

ক্রমশ…

শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---