ভক্তি সহকারে কার্তিক মাস পালনের উপকারিতা জানেন কি?

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস প্রতিবেদন: সনাতন শাস্ত্রে কার্তিক মাসকে বলা হয় মহাদামোদর মাস। ১৯ অক্টোবর থেকে কার্তিক মাস শুরু হচ্ছে। এই দামোদর মাসে গোপাল দামোদর রূপে লীলা করেছিলেন তাই এই মাস যিনি নিষ্ঠা পূর্বক পালন করেন তার ভক্তি জীবনে উন্নতি হয় এবং ব্যক্তিগত জীবনের নানা বাধা-বিপত্তি ও কেটে যায়। কার্তিক মাস বা দামোদর মাস ভগবান বিষ্ণুর মাস রূপে পরিচিত। তাই ভক্তরা এই পুরো মাসটি জুড়ে নিরামিষ আহার করেন। এই মাসটি ত্যাগের মাস রূপেও পরিচিত, সনাতন শাস্ত্রে বলা হয়, এই মাসে ভগবান বিষ্ণুর একগুণ সেবা করলে সহস্রগুণ ফল লাভ করা যায়। তাই ভক্তরা এই মাসটিতে প্রত্যেক মন্দিরে বা তুলসী গাছের নীচে বিষ্ণুর প্রীতি লাভের জন্য দ্বীপ দান করেন। এই পূণ্য মাসে সম্পর্কে পদ্মপুরাণে বলা হয় যে, এই পূণ্য মাসে ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে কেউ যদি একটি প্রদীপ দান করে তবে, তার সমস্ত পাপ নাশ হবে এবং তার পুনর্জন্ম আর হবে না।

বিজ্ঞাপন

এই দামোদর মাসের লীলা সম্পর্কে বলা হয় যে, গোপাল নিত্যদিন ননী চুরি করে আর প্রতিবেশীরা যশোদার কাছে এসে নালিশ করে দিয়ে যায়। এই শুনতে শুনতে বিরক্ত যশোদা একদিন ঠিক করে গোপালকে দড়ি দিয়ে বাঁধবেন কিন্তু তিনি কিছুতেই গোপালকে দড়ি দিয়ে বাঁধতে পারছিলেন না। তিনি যতই গোপালকে দড়ি দিয়ে বাঁধবার চেষ্টা করছিলেন দুই আঙুল দড়ি প্রতিবার কম পড়ছিল, এই দুই আঙুল দড়ির দূরত্ব হচ্ছে ভক্তের ভক্তি শেষে গোপাল মায়ের কষ্ট দেখে মায়ের স্নেহের বন্ধনে নিজেকে আবদ্ধ করে ফেলেন এবং রজ্জুবন্ধন স্বীকার করেন।

দামোদর মাসে যে ব্যক্তি দীপ দান করে সে সংসারে অজেয় ও অক্ষয় কীর্তি স্থাপন করে। এক্ষেত্রে নিবেদিত প্রদীপটি মাটির হলেই ভালো হয়, বলা হয় প্রদীপের আলোর শিখা যত বেশি উজ্জ্বল হবে পাপ তত বেশী করে দূরীভূত হবে। স্কন্ধ পুরাণে বলা হয় যে কার্তিক মাসে যে ব্যক্তি ভগবানের কাছে বা তুলসী তলায় প্রদীপ দান করেন না তারা ব্রহ্মঘাতী, গোঘাতী, স্বর্ণ অপহারী ও সদা মিথ্যাবাদী। দামোদর মাসে প্রদীপ দান প্রসঙ্গে বলা হয় যে, কলিপ্রিয়া তার স্বামীকে বধ করেছিল এবং তার ভুল বুঝতে পেরে সে নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য এই দীপ দান করেন।

এই পবিত্র মাসে দীপ দান করবার জন্য তিনি দেহান্তে বিষ্ণুলোক প্রাপ্ত হন। আবার,এক স্ত্রী ইঁদুর প্রদীপের তেল খেতে এসে নিজের অজান্তেই প্রদীপের সলতে টিকে একটু উস্কে দেয় বা জ্বলতে সাহায্য করে আর এর ফলশ্রুতিতেই দেহান্তের পর তার বৈকুন্ঠলোক প্রাপ্ত হয়। প্রদীপ দেওয়ার সময় ভগবান বিষ্ণুর চিত্রপট বা বিগ্রহের চরণে চার বার, নাভি কমলে দুই বার, মুখমন্ডলে তিনবার ও সর্বাঙ্গে সাত বার (ডানদিক থেকে আরম্ভ করে) প্রদীপটি প্রদক্ষিণ করাবেন।ইসকনের ভক্তরা লক্ষী পূর্ণিমা থেকে রাস পূর্ণিমা পর্যন্ত দামোদর মাস পালন করেন। অর্থাৎ ইসকন ধর্মালম্বীরা ৯ অক্টোবর থেকে এই ব্রত অবলম্বন করে নিরামিষ আহার করবেন।

তথ্য সহায়তা : ইন্টারনেট

আরো পড়ুন