ক্রাইম

বর্ধমান মেডিকেল কলেজের শিক্ষকের উপর প্রাণঘাতী হামলা, বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: কর্মস্থল থেকে রাতে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজের আরএমও টিউটর ডাঃ সেখ মহম্মদ ফকরুদ্দিন। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত ১১টা নাগাদ বর্ধমান শহরের কেশবগঞ্জচটি এলাকায়। ইতিমধ্যেই আক্রান্ত শিক্ষক বর্ধমান থানায় এই ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ডাঃ সেখ মহম্মদ ফকরুদ্দিন অভিযোগে জানিয়েছেন, অচেনা তিনজন ব্যক্তি তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্যই হামলা চালায়। এর ফলে তাঁর শারীরিক, মানসিক, আর্থিক এবং সামাজিক অপূরণীয়, অপরিমেয় ক্ষতিসাধন হয়েছে। বর্তমানে তিনি ভীষনভাবে নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন। তাই দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে যাতে উপযুক্ত সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় তার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

ডাঃ সেখ মহম্মদ ফকরুদ্দিন বর্ধমান থানার অন্তর্গত কেশবগঞ্জ চটি, জি.টি রোড এলাকার বর্ধমান এপার্টমেন্ট এর বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন শল্য চিকিৎসক, আরএমও টিউটর । পুলিশ কে দেওয়া অভিযোগে আক্রান্ত চিকিৎসক জানিয়েছেন, গতকাল রাত্রি ১১ টা নাগাদ প্রতিদিনের মতো তিনি তাঁর কর্মস্থল থেকে নিজের মোটর বাইক যার নম্বর WB AN-1178 নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। প্রায় বাড়ির কাছে চলে আসতেই কেশবগঞ্জচটি এলাকায় তিনি দেখতে পান অন্য একটি মোটর সাইকেল নিয়ে ৩ জন দাঁড়িয়ে আছে। তিনি সোজা বাড়ির দিকে এগিয়ে গেলে ওই তিনজন তাঁর পিছু নেয় এবং তাঁকে অতিক্রম করে আচমকা তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায়। সেই সময় তিনি স্থানীয় একটি নার্সিংহোমের কাছাকাছি চলে আসেন। এরপরই তিনজন একসঙ্গে বাইক থেকে নেমে সামনে ও পিছন থেকে তাঁকে ঘিরে ফেলে।

তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই তিন দুষ্কৃতী তাঁর উপর আক্রমণ শুরু করে দেয়। ওই তিনজন বলতে থাকে যে, ‘তোর জন্যই অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে আছি আমরা।’ এরপরই ওই তিনজন তাঁর বুকে, পেটে, মুখে, পিঠে সজোরে লাথি মারতে থাকে। বেপরোয়া আক্রমণে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এই অবস্থায় খুবই ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। তিনি লক্ষ্য করেন দুষ্কৃতীদের মধ্যে একজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে। তখন তিনি প্রাণনাশের আশঙ্কায় চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকারের আওয়াজ শুনে আশপাশের লোক ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। এইসময় পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনজন পালিয়ে যায়।

মহ: ফকুরুদ্দিন অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁকে উদ্ধার করতে আসা লোকজন এই সময় নিজেদের মধ্যে বলাবলি করেন যে, দুষ্কৃতীদের একজনের নাম সুমন বৈরাগ্য, পিতা পিরু বৈরাগ্য, ঠিকানা রথতলা, বর্ধমান। তিনি জানিয়েছেন, এই নাম ধরেই তিনি অভিযোগ করেছেন থানায়। ডাঃ সেখ মহম্মদ ফকরুদ্দিন বলেন,” তিনি ভাবতেই পারছেন না এই ভাবে দুষ্কৃতীদের হাতে কোন কারণ ছাড়াই কেন আক্রমণের শিকার হতে হল। দুষ্কৃতীদের কাউকেই আমি চিনি না। তাদের কারুর সঙ্গেই আমার ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিলনা। পরিচয়ও নেই। তাহলে কেন ওরা আমার উপর সন্ত্রাস চালালো। এতো আতংকের বিষয়। কর্মস্থল থেকে রাতে আমার মতো অনেকেই বাড়ি ফেরেন।শহরের নিরাপত্তা যদি এই পর্যায়ে পৌঁছায় তাহলে খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়। আমি অভিযোগ জানিয়েছি পুলিশ কে। ” 

Recent Posts