ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,রায়না: আদালতের রায়ে অবশেষে শাসক তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠ পঞ্চায়েতেই কংগ্রেস প্রার্থী কে প্রধান পদের দায়িত্ত্ব অর্পণ করা হল। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না ১ব্লকের নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে। ২২ আসন বিশিষ্ট এই পঞ্চায়েতের একটি মাত্র আসনে কংগ্রেস প্রার্থী মিনতি মাণ্ডি জয়লাভ করেছিলেন। ১৭টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস, একটিতে ভোট হয়নি আর বাকি তিনটি আসনে বাম প্রার্থীরা জয়লাভ করেছিলেন। ঘটনাচক্রে কংগ্রেসের প্রার্থী তফশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের ছিলেন। নাড়ুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদের জন্য আসনটি সংরক্ষিত ছিল তফশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রার্থীর জন্যই।
শাসক তৃণমূল এই সংরক্ষিত আসনে কোন প্রার্থী দিতে পারেনি। আর এখানেই তৈরি হয় সমস্যা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও শাসক তৃণমলের নেতৃত্ব কাউকেই প্রধান পদে বসাতে পারছিল না। শেষমেষ সমস্যা মেটাতে কলকাতা হাইকোর্টে এই বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয় শাসক ফলের পক্ষ থেকে। বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে এই মামলা চলছিল। মঙ্গলবার বিচারপতি কংগ্রেসের প্রার্থীর পক্ষেই রায় দান করেছেন।
এই রায়ে উচ্ছ্বসিত কংগ্রেস। বুধবার প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ একজন তপশিলি উপজাতির সদস্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়লাভ করার পরে নিয়ম অনুযায়ী প্রধান পদের দাবিদার হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু শাসকদল তাঁকে প্রধান হতে বাধা দিচ্ছে। এটা সমগ্র তপশিলি উপজাতির কাছে অপমানজনক বিষয়। শাসকদল আদালতে যে মামলা করেছিল আদালত শাসকদলের সমস্ত যুক্তি খারিজ করে দিয়ে মঙ্গলবার কংগ্রেসের পক্ষে রায় দিয়েছে। এটা আমাদের কাছে নৈতিক জয়।’ তৃণমূলের রায়না ১ব্লক সভাপতি বামদাস মন্ডল বলেন,’ কংগ্রেস মিথ্যা অভিযোগ করছে। কোনো রকম বাধা দেওয়ার প্রমাণ ওদের কাছে নেই। আমি প্রথম থেকেই বলে এসেছি আদালত যে রায় দেবে আমরা সেটাই মেনে কাজ করবো। এখন পঞ্চায়েত প্রধান কি করবেন সেটা ভবিষ্যতে জানা যাবে।’
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “কংগ্রেসের প্রতিনিধিকে প্রধান হতে তৃণমূল বাধা দিয়েছে এই অভিযোগ ঠিক নয়। তৃণমূল কংগ্রেস কাউকে বাধা দেয়নি। পঞ্চায়েতের নিয়ম অনুসারে যিনি প্রধান হওয়ার যোগ্য হবেন তাঁকেই প্রধান করা হবে। এছাড়া আদালত এই বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছে। কংগ্রেস ওই পঞ্চায়েতে একটি মাত্র আসন জিতেছে। তাই বিষয়টি নিয়ে প্রচারের আলোয় আসার জন্যই এই ধরনের অভিযোগ করছেন তারা।”
যদিও কংগ্রেসের অভিযোগ, মিনতি মাণ্ডি যাতে প্রধান হতে না পারেন তার জন্য শাসক দল বিভিন্ন সময়ে নানান ছলনায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এমনকি বোর্ড গঠনের দিন শপথ নিতে গিয়েও মাঝরাস্তা থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হন মিনতি মাণ্ডি। তৃণমূলের সদস্যরা হাইকোর্টে মামলা করেন কংগ্রেস সদস্য প্রধান হতে চাইছেন না বলে। তাই অন্য কেউ যাতে সেই পদে আসীন হতে পারে সেই আর্জি জানানো হয় আদালতে। মঙ্গলবার শুনানি শেষে বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধান পদের দাবিদার কেবল মিনতি মাণ্ডি। সুতরাং ওই পদে তাকেই সুযোগ দিতে হবে। সংরক্ষণের নিয়ম অনুযায়ী এটা সব রাজনৈতিক দলকেই মানতে হবে। অবশ্যই সকলে মিলে পঞ্চায়েতের কাজ করবে।