ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মুর্শিদাবাদ: বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আর তার আগে সাম্প্রতিক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রমশ অস্ত্রভান্ডারে পরিনত হচ্ছে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। বিহারের মুঙ্গের থেকে দেদার আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ ঢুকছে মুর্শিদাবাদে। কিছু আগ্নেয়াস্ত্র সীমান্ত পেরিয়ে যাচ্ছে অশান্ত বাংলাদেশে। কিছু অস্ত্র মজুত হচ্ছে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায়। গত দুদিনে মুর্শিদাবাদের তিনটি থানার এলাকা থেকে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র ও কুড়িটি কার্তুজ সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

অস্ত্র উদ্ধারের একমাসের খতিয়ান দেখে কার্যত চমকে উঠছেন জেলা পুলিশ কর্তারাই। গত একমাসে বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে ত্রিশটি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল কার্তুজ, বারুদ সহ ৪১ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, অবশ্যই উদ্বেগের খবর। তবে অস্ত্রপাচার রুখতে পুলিশও অতি তৎপর হয়েছে। মুঙ্গের মেড আগ্নেয়াস্ত্রের চোরাচালান রুখতে ইতিমধ্যেই বিহার, ঝাড়খণ্ড সহ বাংলা জুড়ে ব্যপক ধরপাকড় শুরু করা হয়েছে।
রবিবার সাগরদীঘি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ দুই অস্ত্র পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বাড়ি সামশেরগঞ্জ ও সুতি এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাগরদিঘী থানার মোড়গ্রাম ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। ধৃত ওই ব্যক্তিদের নাম মোক্তার হোসেন এবং জাহাঙ্গীর হোসেন। তাদের মধ্যে মোক্তার হোসেনের বাড়ি সামশেরগঞ্জ এর ভাসাইপাইকর এবং জাহাঙ্গীর হোসেন সুতি থানার বাউরিপুনির বাসিন্দা। ধৃতদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সাত রাউন্ড কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করেছে সাগরদিঘী থানার পুলিশ। সোমবারই তাদের আদালতে পাঠিয়ে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, একদিন আগে সামশেরগঞ্জ থানার চাঁদপুর এলাকা থেকে ঝাড়খন্ডের এক অস্ত্র কারবারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতের নাম রফিকুল শেখ। বাড়ি ঝাড়খন্ডের পাকুড়। ধৃতের কাছ থেকে দুটি মুঙ্গের মেড ইমপ্রোভাইসড পিস্তল ও ছয় রাউন্ড কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। একইদিনে রেজিনগর থানার পুলিশ মারিটিয়া হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা থেকে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। তল্লাশি চালিয়ে মিলেছে একটি পিস্তল ও দু রাউন্ড কার্তুজ। ধৃতের নাম মোফুজ শেখ। বাড়ি শক্তিপুর। পুলিশ সূত্রে খবর, ফেব্রুয়ারি মাসে ডোমকল মহকুমা এলাকার পাঁচটি থানা এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৭টি আগ্নেয়াস্ত্র।
ফলে ২৬ এর নির্বাচনের আগে রাজ্যের এই সীমান্তবর্তী জেলায় অস্ত্রের এই বিপুল ভান্ডার কার্যত ঘুম ছুটিয়েছে জেলা পুলিশের। গোয়েন্দা বিভাগের অনুমান, ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র বাংলাদেশেও পাচার হচ্ছে। মুর্শিদাবাদে অস্ত্রপাচার এখন পুলিশের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। পাশাপাশি অস্ত্র পাচারকারিরা অতি সস্ক্রিয় হয়ে ওঠায় সাধারণ মানুষেরও উদ্বেগ বাড়ছে। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সাগরদীঘি থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই জোরদার তদন্ত তল্লাশি শুরু করেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মোরগ্রামে কি করছিল, কোথায়, কাদের কাছে এই সমস্ত আগ্নেয়াস্ত্র গুলো পাচার করার পরিকল্পনা ছিল ইত্যাদি।