ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, মাধবডিহি: বর্ষাকালে জেলার সমস্ত নদনদী থেকে বালি তোলার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এরপরেও মাধবডিহি থানার অন্তর্গত বড়বৈনান গ্রাম পঞ্চায়েতের ফতেপুর এলাকায় মুন্ডেশ্বরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তোলার কাজ চালাচ্ছিল কিছু বালি মাফিয়া। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মাধবডিহি থানার ওসি উত্তাল সামন্তের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী রাতেই এলাকা ঘিরে ফেলে অভিযানে নামে। কয়েকজন পালিয়ে গেলেও পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় পাঁচ জন বালি কারবারি। বাজেয়াপ্ত করা হয় দুটি জেসিবি মেশিন সহ ১২টি ট্রাক্টর। ধৃতদের সোমবার বর্ধমান আদালতে পেশ করেছে পুলিশ।
সূত্রের খবর, সরকারি নির্দেশ কে কার্যত বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শাসকদলের স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার মদতেই এই বালি তোলার কাজ চলছিল বলে অভিযোগ। এমনকি তাঁবু খাটিয়ে রীতিমত ভাত, মাংস রান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেখানে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাতেই হানা দেয় মাধবডিহি থানার পুলিশ। ওসির নেতৃত্বে এলাকা ঘিরে ধরপাকড় শুরু করা হয়। যদিও আচমকা এই পুলিশি অভিযানে হকচকিয়ে যায় বালি মাফিয়াদের গ্যাং। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বালির এক কারবারী বলেন,‘আমরা সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম এক নেত্রীকে। তার কথাতেই আমরা ভরসা করে বালি তোলার কাজ শুরু করেছিলাম। তিনি আমাদের বলেছিলেন পুলিশের সঙ্গে সেটিং করে নেওয়ার জন্য। আসলে তিনি যে কিছুই করেননি সেটা পুলিশের এই অভিযানেই পরিস্কার। এখন ফেঁসে গেলাম আমরা।’
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন,” অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে বালির কারবারের সঙ্গে যুক্ত কেউ বেআইনি কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। পুলিশ তাই করেছে। এখন গ্রেপ্তার হওয়ার পর কে কি অভিযোগ করছে তার কোনো সত্যতা নেই। প্রমাণ থাকতে হবে। প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করবে।”
মাধবডিহি থানার ওসি উত্তাল সামন্ত বলেন,” এর আগেও কয়েকবার খবর পেয়ে এই জায়গায় অভিযানে যাওয়া হয়েছিল। তবে বালি কারবারিরা কোনোভাবে খবর পেয়ে পালিয়ে যেতো। এদিন বমাল পাঁচ জনকে ধরা হয়েছে। আটক করা হয়েছে বালি তোলার দুটি জেসিবি মেশিন ও ১২টি ট্রাক্টর।” জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘ সরকারি নির্দেশ অমান্য করে নদী থেকে বালি তোলার কাজ চলছিল। পুলিশের কাছে খবর ছিলই। তাই বেআইনী কারবারের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। আইন মেনেই যা করার সেটা করা হয়েছে।’