শক্তিগড়ে যুবক খুনে গ্রেপ্তার বন্ধু পিন্টু, তদন্তে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,শক্তিগড়: সোমবার সন্ধ্যায় শক্তিগড় থানার হিরাগাছি এলাকার মাঠ থেকে পুলিশ তন্ময় মালিক নামে এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করেছিল। তার বাড়ি হিরাগাছির ঘোষপাড়া এলাকায় বলে পুলিশ জানিয়েছিল। ঘটনার পরই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ জেলা পুলিশের অন্যান্য আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যুবকের মৃত্যুর তদন্ত শুরু করে। মৃতের পরিবারের লোকজন সহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে এই খুনের পিছনে এক বা একাধিক ব্যক্তির হাত থাকতে পারে বলে পুলিশ অনুমান করে।

বিজ্ঞাপন

তদন্তে উঠে এসেছিল তন্ময় মালিকের এক ঘনিষ্ট বন্ধুর নাম। মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছিল একটি সাইকেল। শক্তিগড় থানার পুলিশ এই খুনের বিভিন্ন সূত্র অনুসন্ধান করে অভিযুক্ত সন্দেহে রাখি মুর্মু ওরফে পিণ্টু নামে এক যুবক কে মঙ্গলবার সকালে কালনা বাস স্ট্যান্ড থেকে আটক করে নিয়ে আসে। পুলিশ জানতে পারে ঘটনার পর এই যুবক পালিয়ে কালনা চলে গিয়েছিল। এই খুনের সঙ্গে পিন্টুর জড়িত থাকার বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, তন্ময় ও পিন্টুর মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ছিল। দুজনের মধ্যে সমকামী তত্ত্বও উঠে এসেছে তদন্তে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। কিছু ছবিও পুলিশের হতে এসেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তন্ময় চাকরির খোঁজে বেঙ্গালুরুতে চলে যাবে বলে মনস্থির‌ করেছিল। কিন্তু তন্ময় একবার বেঙ্গালুরু চলে গেলে আর এখানে ফিরবে না এটা বুঝতে পারে পিন্টু। এরপরই পুরনো কিছু ছবির ভিত্তিতে মানসিক চাপ দিচ্ছিল তন্ময় কে পিন্টু বলে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে। সেই আক্রোশ থেকেই এই খুন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এরপরও সব দিক খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা।

জানা গেছে, তন্ময় প্রায় একবছর ধরে হুগলির চুঁচুড়া তে মা পূজা মালিক ও বোনের সঙ্গে থাকতেন। আইটিআই পাশ করে একটি সংস্থায় তন্ময় কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ঠাকুমা তারা মালিক। তিনি জানিয়েছেন, তন্ময় প্রায়ই হিরাগাছিতে তাঁর বাবা তাপস মালিক-সহ অন্যদের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। গ্রামে আসলে এক বন্ধুর বাড়িতেও মাঝেমাঝে থাকতেন। সোমবার সকালে তন্ময় হিরাগাছির বাড়িতে এসেছিল। চাকরির জন্য বাইরে যেতে হবে বলে ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেটের প্রয়োজন ছিল তার। সেই সার্টিফিকেট নিতেই সে এসেছিল বলেই জানিয়েছেন ঠাকুমা তারাদেবী।

তন্ময়ের বাবা তাপস মালিক বলেন, “এদিন বিকেলে ট্রেন ধরে চুঁচুড়া যাওয়ার কথা ছিল ছেলের। বিকেলে আমার বাইকে চেপে স্টেশনের দিকে আসার সময় নেমে যায় সে। বলে, বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে ট্রেন ধরবে। এরপর আমিও চলে যাই। কিন্তু এতবড় ঘটনা ঘটে যাবে বুঝতে পারিনি। ছেলেকে যে বা যারা খুন করেছে তাদের কঠোর শাস্তি চাই। ”

পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই খুন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। খুনের জড়িত একজনকে কালনা থেকে মঙ্গলবার সকালে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে পাখি মুর্মু নামে ওই যুবক  খুনের কথা স্বীকার করেছে। এরপরই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার বর্ধমান আদালতে পেশ করা হবে অভিযুক্তকে। এরই পাশাপাশি গোটা ঘটনার পুনঃনির্মাণ ও তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হবে।’

আরো পড়ুন