নবালিকাদের কাজে লাগিয়ে চলছিল চুরি, মহিলা চোরের গ্যাং পাকড়াও বর্ধমানে

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: নাবালিকা মেয়েদের দিয়ে কয়েকদিন রেইকি করিয়ে মহিলাদের একটি গ্যাং শহরের বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ দোকান থেকে চুরি চক্র চালাচ্ছিল। কিছুদিন ধরেই বর্ধমান শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশের কাছে বন্ধ দোকান কিংবা গোডাউনে চুরির অভিযোগ আসছিল। পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমে এই ধরনের চুরিগুলোর কিনারা করতে পারছিল না। গত ২৩জুলাই নবাবহাটের কাছে শিবপুর দীঘিরপাড় এলাকার একটি মুদি দোকানের মালিক মীর মহম্মদ মৈনুদ্দিন বর্ধমান থানায় তার দোকানে চুরির অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই বর্ধমান থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে এবং আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করে তদন্ত শুরু করে। আর সেখানেই পুলিশ দেখতে পায় অভিযোগকারীর দোকানের পিছন দিকের সিমেন্টের জানলা ভেঙ্গে দুজন অল্প বয়সী মেয়ে ভিতরে ঢুকছে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে এই নাবালিকাদের কাজে লাগিয়ে বর্ধমান শহরের গীমটি ফটক এলাকার রেললাইনের ধারে বস্তিতে বসবাসকারী কয়েকজন মহিলা এই চুরি চক্র চালাচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। বস্তি থেকে কাজলী দাস, মঞ্জুরি দাস, সারানী দাস ও টিঙ্কু দাস নামে চারজন মহিলা কে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে মীর মহম্মদ মৈনুদ্দিনের দোকান থেকে চুরি যাওয়া তেল, সাবান, বডি স্প্রে সহ অন্যান্য সামগ্রী ভর্তি তিনটি বস্তা উদ্ধার হয়। এদিনই ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন অভিযুক্তদের। পুলিশের দাবি, ধৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, শহরের বিভিন্ন দোকানে এইভাবে চুরি করা জিনিসপত্র তারা কমদামে বিক্রী করে পাওয়া টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিত।

পুলিশ জানিয়েছে, চুরির কাজে এই নাবালিকা মেয়েদের ব্যবহার করছিল মূলত একটি মহিলা চোরেদের দল। যারা শহরের বিভিন্ন জায়গায় এই নাবালিকাদের দিয়ে রীতিমতন রৈইকি করে এই চুরির চক্র চালাচ্ছিল। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, নাবালিকাদের এই কাজে নামানোর পিছনে এই মহিলাদের উদ্দেশ্য ছিল। কোনভাবে যদি এই মেয়েরা ধরা পড়ে যায়, সেক্ষেত্রে নাবালিকা হবার সুবাদে মানবিকতার খাতিরে পাবলিক তাদের ছেড়ে দেবে।

ডিএসপি রাকেশ চৌধুরী বলেন, ‘একেবারে পরিকল্পনা করেই এই মহিলা চোরেদের দলটি শহরের বিভিন্ন জায়গায় চুরি করছিল। এদের দলে থাকা নাবালিকাদের আগে থেকে রেইকি করে আসাত। পরে বন্ধ থাকা সেই সমস্ত দোকান বা ছোটখাটো গোডাউনের জানলা, ঘুলঘুলি ভেঙে ভিতরে ঢুকত। ভিতরের জিনিসপত্র বাইরে থাকা মহিলাদের ব্যাগে ভরে সেই গর্ত দিয়ে বের করে দিত। এরআগে শহরে মহিলা চোরের দল ধরা পড়েনি। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা বেশ কিছুদিন ধরে চুরি করলেও আগে কোনদিন ধরা না পড়ায় কোন ক্রিমিনাল রেকর্ড নেই ধৃতদের।’

আরো পড়ুন