ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,আউশগ্রাম: গভীর রাতে বসত বাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম থানার পলাশপাড়া গ্রামে। বাড়ির পুরুষ দের হাত, মুখ, চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে ঘরের আলমারি, শো-কেস ভেঙে প্রায় তিন ভরি সোনা, পাঁচ ভরি রূপো, ২৫হাজার টাকা সহ তিনশ বিদেশি ডলার ও ৩হাজার জাম্বিয়ান মুদ্রা লুঠ করে নিয়ে যায় প্রায় ১৫জনের ডাকাত দল বলে আউশগ্রাম থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন বাড়ির কর্তা অনিল দত্ত। তিনি আরো অভিযোগ করেছেন, ডাকাতরা ঘরে থাকা কম্বল, লেপ সহ ভোটার কার্ড, আধার কার্ড ও অনেক দরকারি সামগ্রী লুট করে নিয়ে গেছে।
পরিবার সূত্রে জানাগেছে, ঘটনার পর পাড়ার লোকেদের খবর দেওয়া হলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। পরে রাতেই পুলিশ আসে। পুলিশ ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে। সকালে বাড়ির মালিক অনিল দত্ত থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে আসেন। অনিল বাবুর বড় ছেলে অপূর্ব দত্ত জানিয়েছেন, ‘ গতকাল রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ হটাৎ ঘুমের মধ্যে টের পাই ঘরের জানালায় ঢিল ফেলার মতো কিছু আওয়াজ আসছে। সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে এক বন্ধুকে বিষয়টা জানিয়ে লোকজন ডাকার জন্য বলি।
কিন্তু ওই বন্ধু আমার বাড়ির কাছে আসতেই ওকে বন্দুক দেখিয়ে চুপচাপ চলে যেতে বলে দুষ্কৃতীরা। এরই মধ্যে বাবার গলার আওয়াজ শুনে বাবার ঘরে যেতেই চারজন আমার গলায় হাঁসুয়া, কাটারি চেপে ধরে। নিজের ঘরে ফিরে যেতে বলে তারা আমায়। তারা আরো বলে এদিক ওদিক করলে প্রাণে মেরে ফেলবে। এরপর ডাকাতরা আমার চোখ, হাত গামছা দিয়ে বেঁধে দেয়। বাড়ির মহিলাদের কাছে আলমারির চাবি নিয়ে আমাদের বাড়ির সমস্ত সোনা, রুপোর গহনা সহ নগদ টাকা, ডলার অন্যান্য বহু জিনিস লুঠ করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা।’
অপূর্ব দত্ত জানিয়েছেন, ‘এর আগেও আমাদের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তখন আমি ছোট ছিলাম। বর্তমানে আমি বিদেশে থাকি। তিনমাস পর বিদেশে আবার কাজে ফিরে যাবো। নিজের প্রয়োজনে আমার কাজে কিছু বিদেশী মুদ্রা রাখা ছিল। ডাকাতরা সেই সমস্ত ডলার, জাম্বিয়ান মুদ্রা লুঠ করে নিয়ে গেছে। ডাকাতরা সংখ্যায় প্রায় ১৪থেকে ১৫জন ছিল বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে সবাই বাংলায় কথা বলছিল। একজন বাংলা বললেও তার কথায় হিন্দি টান ছিল। পাড়ার লোকেরা জড়ো হতেই ডাকাতরা চম্পট দেয়। ওদের সঙ্গে বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। সবাই মোটামুটি হাফ প্যান্ট পড়ে এসেছিল।’
অপুর্ব দত্ত আরো জানিয়েছেন, ‘ডাকাতরা বাড়ির গ্রিলের তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে প্রথমে মুড়ি, ঘুগনি, জল খেয়েছে। পরে সেখানেই শৌচকর্ম করে ডাকাতি করতে ঢুকেছিল। প্রথমেই বাবার ঘরে ঢুকে বাবার মুখ, চোখ, হাত গামছা দিয়ে বেঁধে দেয়। পরে আমাকেও গলায় হাঁসুয়া ঠেকিয়ে অন্য ঘরে আটকে রেখে ডাকাতি করে। যদিও বাড়ির মহিলাদের কোন ক্ষতি করেনি ডাকাতরা।’ পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।