ইদিলপুরের দামোদর নদে অবৈধ বাঁধ তৈরি করে চলছে প্রতিদিন বালি চুরি, নিরব প্রশাসন

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: খোদ বর্ধমান পৌরসভা লাগোয়া ইদিলপুর সংলগ্ন দামোদর নদে চলছে দেদার বালি চুরি করে পাচার। রাতের অন্ধকারে নদীতে মেশিন নামিয়ে দেদার বালি কেটে পাড়ে তুলে রাখছে বালি মাফিয়ারা। পরে সেই বালি ট্রাক্টরের মাধ্যমে বেপরোয়াভাবে পাচার করে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি করে ফাঁক করে দিচ্ছে। নদীর যে অংশ থেকে বালি চুরি চলছে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সূত্রে জানা গেছে, সেটি ইদিলপুর লাগোয়া বেলকাশ পঞ্চায়েতের ফকিরপুর এলাকার মধ্যে পড়ে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় একটি হনুমান মন্দিরের পাশ দিয়ে নিচে নদীর দিকে নেমে গেলেই রয়েছে বালির গাড়ি যাতায়াতের জন্য তৈরি করা সম্পূর্ন অবৈধ একটি বাঁধ। নদীর গতিপথ আটকে সম্পূর্ন বেআইনি ভাবে এই বাঁধ তৈরি করা হলেও জেলা ভূমি রাজস্ব দপ্তর কিংবা সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের এখনও নাকি সেটির অস্তিত্ব নজরে আসেনি। ফলে বেপরোয়া এই এলাকার বালির অবৈধ কারবারিরা। সূত্রের খবর, দিনের আলোয় বালি তোলা বন্ধ রাখে এই চোরা বালি কারবারিরা। সন্ধ্যার পর একটু রাত বাড়লেই এই এলাকায় শুরু হয়ে যায় বালির বেআইনি রমরমা কারবার।

রাতের অন্ধকারে ট্রাক ট্রাক বালি নদী থেকে তুলে কোন কাগজপত্র ছাড়াই দেদার পাচার করে দিচ্ছে স্থানীয় কিছু বালি মাফিয়া। অভিযোগ, এই বেআইনি বালি চুরি চক্রের সঙ্গে পঞ্চায়েত ও স্থানীয় কিছু শাসক দলের লোকজন নাকি সরাসরি জড়িয়ে আছে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ।স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, রাত থেকে ভোর পর্যন্ত প্রায় কয়েক শো ট্রাক্টর বালি বিনা বাধায় প্রতিদিন পাচার করে দিচ্ছে বালি মাফিয়ারা। এমনকি ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকরা কখন এলাকায় অভিযানে আসছে তার খবরও আগাম পৌঁছে যাচ্ছে এই চোরা কারবারিদের কাছে। তার জন্য রীতিমত একটা সিস্টেম তৈরি করে রেখেছে এই বালি সিন্ডিকেটের দল।

খোদ বর্ধমান রাজবাড়ী থেকে কামনাড়া, পিরতলা ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের অফিসের বাইরে সর্বক্ষণ একটা বাইক বাহিনী নজরদারিতে থাকে বলে সূত্রের খবর। ফলে প্রশাসনের গাড়ি অফিস থেকে বেরোলেই বালি ঘাটের লোকজনের কাছে দ্রুত খবর পৌঁছে যাচ্ছে। এমনকি প্রশাসনের সঙ্গে পুলিশের গাড়ি আছে কিনা তারও খবর পৌঁছে দেওয়া হয় বলে সূত্র মারফত জানা গেছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশাসনের টিম যখন অভিযানে বেরিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছচ্ছে, ততক্ষণে এলাকা খালি করে দিচ্ছে অবৈধ বালির কারবারিরা। নদীতে থাকা মেশিন কিংবা বালি নিয়ে যাবার জন্য গাড়ি সবই সরিয়ে দেওয়া হয় দ্রুত। ফলে প্রায়ই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে প্রশাসনকে।

স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে এই স্থানীয় বালি কারবারিদের অলিখিত কিছু ‘ সেটিং ‘ থাকলেও থাকতে পারে। নাহলে কিভাবে দিনের পর দিন জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের নাকের ডগায় এইভাবে বেআইনি বালি চুরি করে পাচার চলতে পারে! আর এইভাবেই সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পদ, রাজস্ব চুরি করে প্রতিদিন ফুলেফেঁপে উঠছে কিছু অসাধু বালি কারবারিরা। যদিও প্রশাসনের কাছে এই বালি চুরির প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় যে, অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের খবর থাকলে অভিযান চালানো হয়। এছাড়াও নিয়মিত অভিযান করা হয় নদীতে বেআইনি ভাবে বালির কারবারের বিরুদ্ধে। কাগজপত্র ছাড়া বালির গাড়ি নিয়ে রাস্তায় উঠলে সেইসব গাড়ি ধরে জরিমানাও করা হয়।

আরো পড়ুন