---Advertisement---

অজয় জুড়ে বেআইনি বালিখাদের রমরমা, মাফিয়াদের সঙ্গে শাসক ও প্রশাসনের ‘সেটিং’ তত্বের অভিযোগ স্থানীয়দের

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মঙ্গলকোট: নদনদী থেকে বালি তোলার জন্য একদিকে যখন সরকারের ঘরে কোটি কোটি টাকা জমা করে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বৈধভাবে অনুমোদন পাওয়া বালি কারবারিরা প্রশাসনিক জটিলতায় ব্যবসা করতে পারছেন না, তখন এক শ্রেণীর বালি মাফিয়ারা নাকি স্থানীয় শাসক দলের নেতাদের, এমনকি পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বেআইনি বোঝাপড়ার মাধ্যমে রমরমিয়ে অবৈধভাবে নদী থেকে বালি চুরি করে পাচার করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আর এরফলে খোদ সরকারেরই কোটি কোটি টাকার রাজস্ব লুট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।

বিজ্ঞাপন

যদিও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিক দের এই বিষয়ে একটাই বক্তব্য, অভিযোগ পেলেই তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এমনকি বালির অবৈধ কারবার বন্ধে নিয়মিত অভিযানও চালানো হচ্ছে। বেআইনি বালির গাড়ি থেকে জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা সম্পূর্ন ভিন্ন বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের অজয় নদের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে একাধিক অবৈধ বালি ঘাট থেকে প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে বালি ভর্তি ট্রাক, ডাম্পার জেলার বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে রাজ্যের নানান প্রান্তে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে।

অভিযোগ, মঙ্গলকোট ব্লকের লাকুড়িয়া অঞ্চলের সাগিরা থেকে মাঝিগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েতের কেওড়সা পর্যন্ত অজয় নদের ধারে প্রায় ১০টি অবৈধ বালি ঘাট চলছে। প্রতিদিন এই ঘাটগুলোর প্রতিটি থেকে গড়ে প্রায় দেড়শোর ওপরে বালির গাড়ি বালি নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। এই বালি চলে যাচ্ছে নতুনহাট থেকে কাটোয়া, বর্ধমান, নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর, কলকাতা, মালদা, ফারাক্কা, উত্তর দিনাজপুর রুট হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকি রাজ্যের বাইরেও পাচার করা হচ্ছে এই বালি।

কোন বৈধ চালান ছাড়াই এই সমস্ত বালির গাড়ি অদৃশ্য জাদুবলে জেলার সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে নানান প্রান্তে। আর এখানেই উঠে আসছে বালি মাফিয়াদের সঙ্গে প্রশাসনের একাংশের ‘সেটিং ‘ তত্ত্ব। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মঙ্গলকোট ব্লকে যারা অবৈধ বালির কারবার চালাচ্ছে তারা আসলে ‘ কাঠের পুতুল ‘, এই বেআইনি বালি কারবারের সঙ্গে শাসকদলের কিছু প্রভাবশালী নেতৃত্ব, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের একাংশ ও এলাকার কিছু মাতব্বর ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। তাদেরই প্রভাবে দিনের পর দিন এইভাবে অবৈধ বালির কারবার চলে আসছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের একাংশের আরো অভিযোগ, প্রশাসন মাঝে মধ্যে লোক দেখাতে অভিযানে গেলেও, তাদের অভিযানের খবর আগেই পৌঁছে যায় বালি মাফিয়াদের কাছে। আর তাই খাতায় কলমে অভিযানের হিসাব নথিভুক্ত হলেও সরকারি রাজস্ব খাতে কাচকলা ঢোকে।

See also  বর্ধমান আদালতে জামিন নিয়েই মালদা বিস্ফোরণে এনআইএ তদন্ত চাইলেন দিলীপ ঘোষ

পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, “ইতিমধ্যে ভূমি দপ্তর ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি যেখানেই বেআইনি ভাবে বালি তোলা হবে যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমি নিজেও একাধিকবার রাস্তায় বালির গাড়ি আটকে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের খবর দিয়েছি। জরিমানাও আদায় হয়েছে। ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর থেকেও নিয়মিত এই সমস্ত বেআইনি বালিঘাট গুলোতে অভিযান চালানো হয়। আমরা জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিতে জেলাজুড়ে বেআইনি বালি কারবার নিয়ে খুব শীঘ্রই আলোচনা করবো। তারপরই সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোর সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।’

মঙ্গলকোট ভূমি রাজস্ব দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অবৈধ বালি ঘাট গুলোতে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। অনিয়ম ধরা পড়লে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়। ইতোমধ্যেই ব্লকের তিনটি বেআইনি বালি খাদানের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই আবার অভিযান চালানো হবে। অন্যদিকে, মঙ্গলকোট থানার এক আধিকারিক কে বালির বেআইনি কারবার প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে, তিনি জানান, বালিঘাট নিয়ে কোন এফআইআর হয়েছে কিনা সেটা তার জানা নেই। তবে বালির বেআইনি কারবার নিয়ে কোন অভিযোগ আসলে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। নিয়মিত অভিযানও চালানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।

ক্রমশ…

শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---