ফোকাস বেঙ্গল ওয়েব ডেস্ক: ভোট দেওয়ার জন্য আর নিজের কেন্দ্রের নির্ধারিত বুথে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। এবার দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন ভারতবাসী। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকেই এই ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এমনটাই জানিয়েছে তারা। এই পদ্ধতির পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘রিমোট ভোটিং”। উন্নত প্রযুক্তির রিমোট ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে দেশের যে কোনও জায়গায় বসে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারবেন বলে দাবি করেছে কমিশন। আগামী ১৬ জানুয়ারি স্বীকৃত আটটি জাতীয় এবং ৫৭টি রাজস্তরীয় রাজনৈতিক দলকে এই পদ্ধতির মহড়া হাতেকলমে দেখানো হবে বলেও জানিয়েছে কমিশন।
এই পদ্ধতি চালু নিয়ে অবশ্য বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আগেই আপত্তি জানিয়েছিল। গত বছর ২৫ জানুয়ারি জাতীয় ভোটার দিবসে প্রথম এই ‘রিমোট ভোটিং’ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করে কমিশন। এরপর গত নভেম্বর মাসে আইন মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির স্থায়ী বৈঠকেও রিমোট ভোটিং নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানায় বেশ কয়েকটি দল। তাদের যুক্তি ছিল, কমিশন ক্লিনচিট দিলেও ইভিএম নিয়ে বিভিন্ন সময় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ‘রিমোট ভোটিং’ পদ্ধতি সমর্থনযোগ্য নয়। যদিও কমিশনের পাল্টা যুক্তি, নির্বাচনে বেশি সংখ্যক মানুষের যোগদান নিশ্চিত করাই তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য।
তারা জানিয়েছে, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে ভোটদানের হার ছিল ৬৭.৪ শতাংশ। বিশাল সংখ্যক মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ থেকে নিজেদের বঞ্চিত রেখেছিলেন কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নেমে দেখা যায়, কাজের সন্ধানে বৃহৎ সংখ্যক মানুষকে ভিন রাজ্যে থাকতে হয়। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার জন্যও বহু পড়ুয়া বাইরে থাকেন। ভোটের দিন দূরত্বের কারণে তাদের ভোটদানে অনীহা থেকে যায়। সেই কারণেই উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই রিমোট ভোটিংয়ের ব্যবস্থার আয়োজন। সরকারি কর্মীদের জন্য যেমন পোস্টাল ব্যালট জারি হয়, ঠিক তেমনই নির্বাচনী ক্ষেত্রের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের নামেও ই-ব্যালট ইস্যু করা হবে। প্রথম পর্যায়ে রিমোট ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ৭২টি পর্যন্ত নির্বাচনী ক্ষেত্রের ভোটগ্রহণ সম্ভব হবে।
কমিশনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, এই ব্যবস্থা চালু করতে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, নির্বাচন পরিচালনা আইন, ও ভোটার রেজিস্ট্রেশন আইনে সংশোধনী প্রয়োজন। এছাড়াও নির্বাচনী ক্ষেত্রের বাইরের জেলা বা রাজ্যে থাকা কোন কোন নাগরিক দূরবর্তী ভোটদানের সুযোগ পাবেন, সেই সংজ্ঞা নির্ধারণের মতো বিষয়গুলিও রয়েছে। ১৬ জানুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলির কাছ থেকে এবিষয়ে মতামত নেওয়া হবে।