সৌরীশ দে,বর্ধমান: শীতের প্রথম রবিবার সকাল থেকেই ভিড় উপচে পড়ল রমনাবাগান জুলজিক্যাল পার্কে। উত্তুরে হওয়ায় ইতিমধ্যেই শীত বেশ জাঁকিয়ে পড়েছে। শীতের সকালের রোদ গায়ে মেখে রবিবার খুব সকাল থেকেই জেলার নানান প্রান্ত থেকে কচিকাঁচারা রমনাবাগানের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ভিড় জমাতে শুরু করে। বন দপ্তরের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছরে দেখা গেছে সাধারণত ২৫ ডিসেম্বরের পর থেকে দর্শকরা রমনা বাগানে ভিড় করতে শুরু করেন। কিন্তু এবার শীতের শুরুতেই রেকর্ড ভিড় দেখে খুশির হওয়া গোটা রমনাবাগান জুড়ে। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা আশা করছেন এবছর দর্শক সংখ্যা বিগত অন্যান্য বছরের তুলনায় রেকর্ড সৃষ্টি করবে।
বন দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এদিন বিকেল পর্যন্ত রমনা বাগানে প্রায় ২ হাজার দর্শক প্রবেশ করেছে। তার মধ্যে যেমন বিভিন্ন স্কুলের ছোট পড়ুয়ারা রয়েছে, তেমনি মা বাবার হাত ধরে এই পার্কের নানান পশু পক্ষীদের দেখার আনন্দ উপভোগ করতে বহু দর্শক এসেছে। জানা গেছে, এই মুহূর্তে রমনাবাগানে দুটি প্রজাতির হরিণের (স্পটেড ডিয়ার, বার্কিং ডিয়ার) সংখ্যা মিলিয়ে প্রায় ১৩০ টির কাছাকাছি হরিণ রয়েছে। পাঁচটি নোনা জলের কুমিরের পাশাপাশি একটি মিষ্টি জলের বিশাল কুমির দর্শকদের আকর্ষণের অন্যতম কারণ। রয়েছে পার্কে ঢোকার মুখেই চিতা বাঘের এনক্লোজার। সেখানে পূর্ণ বয়স্ক দুটি চিতার পাশপাশি রয়েছে তাদেরই দশ মাসের শাবক চিতা। রয়েছে ভল্লুক, সজারু, সিলভার ও গোল্ডেন ফিজ্যান্ট, খরগোশ, বিভিন্ন প্রজাতির বাঁদর, ইমু পাখি, টিয়া, বিলুপ্তপ্রায় দুটি মদন টাক পাখি, ময়ূর সহ নানান পশু পাখি। এছাড়াও এই পার্কেই রয়েছে প্রকৃতি বিক্ষণ কেন্দ্র। যা আগত দর্শকদের আকর্ষণের অন্যতম স্থান।
শীতের সকালে খোলা আকাশের নিচে রোদ পোহাতে খাঁচা থেকে বেরিয়ে আসা পশু পাখিদের দেখার আনন্দই আলাদা। আর এই সুযোগ কেউই হাতছাড়া করতে চায় না। তাই ছুটির দিনে সাত সকলেই হাজার হাজার মানুষের একমাত্র গন্তব্য হয়ে উঠেছে অফুরন্ত গাছ গাছালি ঘেরা মোহময় বর্ধমানের রমনা বাগান অভয়ারণ্য। বন দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এদিন পার্কে প্রবেশের টিকিট বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকার। যেটা রমনা বাগানের ইতিহাসে ডিসেম্বরের এই সময়ে একপ্রকার রেকর্ড। সামনে বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষ সহ গটা শীতকাল অপেক্ষা করছে, স্বাভাবিকভাবেই এবছর দর্শক সমাগমের নিরিখে যে একটা রেকর্ড তৈরি হতে পারে সেব্যাপারে খুবই আশাবাদী রমনা বাগান জুলজিক্যাল পার্ক কর্তৃপক্ষ।