ক্রাইম

বর্ধমানে ফের চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে, লক্ষাধিক টাকার অফার রোগীর আত্মীয়কে!

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: ফের চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের হল বর্ধমানের কেশবগঞ্জচটি এলাকার একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। বর্ধমান থানায় এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের থানা এলাকার বাসিন্দা মৃত হাসিনা বেগমের (৩৩) স্বামী শেখ সাগর। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত নার্সিংহোমের পক্ষ থেকে পুলিশের হাতে রোগীর মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার মৃতার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। মৃতার আত্মীয়র অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন স্বাস্থ্য দপ্তর মেডিক্যাল টিম তৈরি করে অভিযোগের তদন্ত করবে। 

মৃত হাসিনা বেগমের স্বামী শেখ সাগর বলেন,’ গত ৯মার্চ তার স্ত্রীকে কেশবগঞ্জচটি এলাকার স্বাস্থ্য নিকেতন নামে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ রোগীর শারীরিক পরীক্ষা করে গলব্লাডারে পাথর রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী বেশ কিছু পরীক্ষাও করানো হয়। ভর্তির সময় সম্পূর্ন সুস্থ স্বাভাবিক ছিলেন তার স্ত্রী। এমনকি শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্টে খারাপ কিছু উল্লেখও ছিল না। ১০তারিখ বিকেলে তার স্ত্রীর অপারেশন হবে বলে নার্সিংহোম থেকে জানানো হয়েছিল।

সেইমত শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ হাসিনা বেগম কে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর একঘন্টা পর চিকিৎসক বেরিয়ে এসে বলেন, অপারেশন সাকসেফুল হয়েছে, জ্ঞান ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই আমার স্ত্রীকে আইসিসিইউ তে স্থানান্তর করে দেয় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। আর তারও ঘণ্টা তিনেক পর তাকে জানানো হয় তার স্ত্রী মারা গেছেন। আমি মানসিক ভাবে ভেঙে পরি। এরই মধ্যে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক আমায় তিন লক্ষ টাকা দেবার প্রস্তাব দেয় এবং রোগীর দেহ নিয়ে চলে যাবার জন্য বলে। যদিও এই প্রস্তাবে আমি রাজি হয়নি।

খবর পেয়ে আমার পরিবারের লোকজন আসার পর বর্ধমান থানায় নার্সিংহোম ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ জানিয়েছি। যে মানুষটা ভর্তির সময়েও সম্পূর্ন সুস্থ স্বাভাবিক ছিল, এমনকি অপারেশনের পরেও ডাক্তার সব ঠিকঠাক আছে বলেই জানিয়েছিলেন। তারপর কিভাবে আমার স্ত্রী মারা গেলেন? এই মৃত্যুর জন্য নার্সিংহোমই দায়ী। আমার একটি ছোট মেয়ে রয়েছে। তার কি হবে। কে দেখবে তাকে। আমি এই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’

এদিকে গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে নার্সিংহোমের এক অংশীদার সাহেব সামসুদ্দিন কে ফোন করা হলে অন্য এক ব্যক্তি ফোন ধরে জানান, উনি বিদেশে আছেন। তিনি কিছু বলতে পারবেন না। পরিবর্তে ওই ব্যক্তি নার্সিংহোমের আরেক জনকে ফোন দিলে তিনি বলেন,’ এখন এই বিষয়ে তারা কিছু বলতে পারবেন না। কারণ বিষয়টি বর্ধমান থানা দেখছে। যদি কিছু জানতে হয় নার্সিংহোমে এসে কথা বলুন।

Recent Posts