শিক্ষা

পুর্বস্থলিতে ছাগল কুকুরের সঙ্গেই পড়ুয়াদের খেতে হচ্ছে মিড ডে মিল, ক্লাস করতে হচ্ছে ভগ্নপ্রায় ঘরে, আলোড়ন

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, পূর্বস্থলি: যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে শ্রেণীকক্ষের দেওয়াল। কিন্তু সেই দেওয়ালের পাশে বসেই প্রতিদিন ক্লাস করতে হচ্ছে প্রাক প্রাইমারির পড়ুয়াদের। এমনকি স্কুলে এসে মিড ডে মিল খেতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে মাঠে বসে। সেটাও আবার ছাগল, কুকুর, হাঁস, মুরগির সঙ্গে। পড়ুয়াদের নাকি এইভাবেই অভ্যাস হয়ে গেছে! ছাগল এসে পড়ুয়ার হাতের খাবার নিয়ে টানাটানি পর্যন্ত করে বলে অভিভাবক দের অধিকাংশের অভিযোগ। অবাক হওয়ার মতো বিষয় হলেও, বাস্তবে এই অবস্থাতেই প্রাণ হাতে করে পড়াশোনা করতে স্কুলে যেতে হচ্ছে কচিকাঁচা দের।

পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা মহকুমার অন্তর্গত পূর্বস্থলী ২ ব্লকের লক্ষ্মীপুর পশ্চিম আটপাড়া এফ পি স্কুলের এমনই বেহাল দশা। ভগ্নপ্রায় ক্লাসরুমের মধ্যেই বিপজ্জনক ভাবে চলছে প্রাক প্রাইমারি ও ক্লাস ওয়ানের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা। স্কুলের মিড ডে মিলও ছাত্র-ছাত্রীরা মাঠে বসে কুকুর-ছাগল-হাঁসের সাথে একসাথে খাচ্ছে। এমনই অমানবিক, ভয়ংকর চিত্র উঠে এসেছে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

এদিকে স্কুলে পর্যাপ্ত ঘর নেই, তাই ভগ্নপ্রায় ঘরেই ক্লাস করাতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের, সাফাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ গোপাল মণ্ডলের। একইসাথে মিড ডে মিল প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, স্কুলের চারপাশে ঠিকঠাক সীমানা প্রাচীর নেই, পড়ুয়াদের খাওয়ার জন্য আলাদা করে কোন জায়গা নেই, তাই এই সমস্যা। অন্যদিকে পূর্বস্থলী উত্তর চক্রের স্কুল পরিদর্শক উজ্জ্বল রায়ের বক্তব্য, স্কুলের ঘরের বেহাল অবস্থার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো আছে। খুব শিগগিরই কাজ হবে। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কুকুর ছাগলের মিড ডে মিল খাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

তবে অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলের যে ঘরে ছোট বাচ্চাদের ক্লাস করতে হচ্ছে, তার দেওয়াল মাঝ বরাবর ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। যখন তখন ভেঙে পড়তে পারে। বিপদের আশঙ্কা করে অনেকেই তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুলেই পাঠায় না। স্কুলের শৌচালয়েরও বেহাল দশা, কয়েক বছর আগে আম্ফান ঝড়ের সময় মিড ডে মিল খাওয়ানোর ঘরের চাল উড়ে গেছে, এখনও সেই একই অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে পড়ুয়াদের খেতে হচ্ছে খোলা মাঠে বসে ছাগল, কুকুর, হাঁস, মুরগি সঙ্গে।