ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, আউসগ্রাম: পানিও জল প্রকল্প নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন বিডিওর সামনেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধানের তুমুল বচসার ভিডিও ভাইরাল। স্বাভাবিকভাবেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিও ঘিরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ২ বিডিও অফিসে ব্লকের পানীয় জল প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক ডাকেন বিডিও গোপাল বন্দোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও পঞ্চায়েত প্রধানরা।
আলোচনা চলাকালীন হঠাৎ অমরপুর পঞ্চায়েতের প্রধান এবাদত শেখের সঙ্গে আউশগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৈয়দ হায়দার আলীর তুমুল বাগবিতণ্ডা শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে যাওয়ার উপক্রম হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত বিডিও কোনক্রমে পরিস্থিতি সামাল দেন। এইসময় বৈঠকে উপস্থিত কেউ এই গোটা ঘটনার ভিডিও মোবাইল ফোনে রেকর্ডিং করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে আউশগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতি থেকে এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের উদ্দেশ্য বেশকয়েকটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। মাস তিনেক আগে অমরপুর পঞ্চায়েতের ভূয়েরা, আদুরিয়া গ্রামে দুটি সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর জন্য টেণ্ডার ডাকা হয়েছিল। স্থানীয় এক ঠিকাদার ওই পাম্প বসানোর জন্য টেণ্ডার পেয়েছেন। কিন্তু কোন পাড়ায় সাবমার্সিবেল পাম্প বসানো হবে সেই জায়গা নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে ভূয়েরা গ্রামে। ঝামেলার জন্য প্রশাসন থেকে জনৈক ঠিকাদারকে মৌখিকভাবে কাজটি কয়েকদিনের জন্য বন্ধ রাখতে বলা হয়। কিন্তু তারপর থেকে আর ভূয়েরা গ্রামে পাম্প বসেনি। কাজ আটকেই রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বৈঠক চলাকালীন অমরপুর পঞ্চায়েতের প্রধান এবাদত শেখ ভূয়েরা গ্রামের পাম্পের সমস্যার কথা তুলতেই আউশগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৈয়দ হায়দার আলীর সঙ্গে তুমুল বচসা শুরু হয়। একে অপরের দিকে মারমুখী হয়ে ওঠেন। বাধ্য হয়ে বিডিও এবং অন্যান্যদের পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।
আউশগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৈয়দ হায়দার আলী বলেন,’ ভূয়েরা গ্রামে সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর কাজ এখনও হয়নি ঠিকই। কিন্তু এদিনের বৈঠকে এই প্রসঙ্গে আলোচনার কোন জায়গা ছিল না। অমরপুর প্রধান সেই প্রসঙ্গ ওঠাতেই তাঁকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করা হয়। তিনি বিষয়টি না বুঝে চিৎকার চেঁচামেচি করেছেন। যে দাগ নম্বরে ওই পাম্প বসানোর জন্য টেণ্ডার হয়েছে নিয়ম অনুযায়ী সেখানেই বসাতে হবে। এই বিষয়ে আমি ইতিমধ্যেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারকে বলেছি। তবে কাজ এখনও না হওয়ার কারণে প্রধান উত্তেজিত হয়ে পড়েন।’
অন্যদিকে প্রধান এবাদত শেখ বলেন,’আমাদের এলাকায় কিছু সমস্যার কারণে পাম্প বসানোর কাজ হয়নি। কোথায় বসানো হবে সেই জায়গা নির্ধারণ নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। আবার এলাকায় পানীয় জলের সমস্যাও রয়েছে। তাই এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। বৈঠকের আলোচনার মধ্যে এই সমস্যার কথা আমি বলতে যাই। কিন্তু আমাকে কথা বলতে দিচ্ছিলেন না সভাপতি। তাই তার সঙ্গে বচসা শুরু হয়। এমন কিছু ঘটেনি।’
আউশগ্রাম ২ বিডিও গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,’ওই ঠিকাদারকে ডেকে দ্রত কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’