এবার শীতে রমনাবাগানের প্রধান আকর্ষণ চিতার ঝাঁক, চালু হচ্ছে ফুড কোর্ট

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: শীত পড়তে আর কয়েকদিনের অপেক্ষা। আর শীতকাল মানেই ঘোরাঘুরি, পিকনিক, খাওয়ার দাওয়ার আনন্দ। সপরিবারে দুপুরের রোদ গায়ে মেখে বাঘ, ভল্লুক, কুমির দেখার আনন্দ কেই বা উপভোগ করতে না চায়। তাই এবার শীতে পশু ও প্রকৃতিপ্রেমীদের একমাত্র গন্তব্য হতে চলেছে বর্ধমানের রমনা বাগান অভয়ারণ্য। আসন্ন শীতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে দর্শকদের মনোরঞ্জন দিতে ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হল এই প্রথম রমনাবাগানে প্রবেশের পরই দর্শকরা মুখোমুখি হবেন চিতা বাঘের ঝুন্ডের সঙ্গে।

বিজ্ঞাপন

চার চারটি চিতা স্বাগত জানাবে দর্শকদের। রমনা বাগানের ইতিহাসে এই প্রথমবার দর্শকরা একসঙ্গে চারটি চিতা বাঘ কে দেখার রোমাঞ্চ উপভোগ করতে পারবেন। এতদিন পুরুষ চিতা ধ্রুব আর মেয়ে চিতা কালি কেই দর্শকরা সামনে থেকে দেখে এসেছেন। এবার বাবা মায়ের সঙ্গে ছোট্ট দুই চিতা শাবক কেও দৌড়াদৌড়ি করতে দেখার আনন্দ পাবেন। এই শীতেই দর্শকদের আনন্দ দিতে চিতা শাবকদের উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য বন বিভাগীয় আধিকারিক নিশা গোস্বামী।

এরই পাশাপাশি লম্বা লম্বা গাছের সারির মাঝ দিয়ে মোড়ামের রাস্তা ধরে কিছুটা এগিয়ে গেলেই দেখা যাবে ভল্লুক। তার কিছুটা দূরে সম্বর হরিণের এনক্লোজার, তার উল্টোদিকে জলাশয়ে দেখা পাওয়া যাবে ঘড়িয়াল দের। পাশপাশি রয়েছে স্পটেড ডিয়ার ও বার্কিং ডিয়ারের খাঁচা। তিনটি প্রজাতির হরিণ দেখার স্বাদ উপভোগ করে কিছুটা এগোলেই এবার পাখির খাঁচার সামনে। যেখানে দেখা মিলবে এমু, গোল্ডেন পিজিয়ন, সিলভার পিজিয়ন আর জাতীয় পাখি ময়ূরের। ভাগ্য ভাল থাকলে খোলা আকাশের নিচে গাছগাছালি ঘেরা এই অভয়ারণ্যে ময়ূরের ডাক শুনে মন ভরে যেতে পারে।

এরই পাশে দেখা মিলবে বাঁদর আর লেঙ্গুরের। আছে সজারু। বিরাট ডানা আর লম্বা ঠোঁট নিয়ে জাল দিয়ে ঘেরা এনক্লোজারে দেখতে পাবেন মদনটাক আর শামুকখোল পাখির। পাখির খাঁচার উল্টোদিকে রয়েছে এই পার্কের অন্যতম আকর্ষণ বিশাল কুমির। দুপুরের রোদে গা গরম করতে জল থেকে উঠে ডাঙ্গায় শীতঘুমরত কুমির কে দেখার আনন্দই আলাদা। শেষে দেশি শিয়াল আর শকুন কে দেখার পর বেরিয়ে আসার আগে আপনাকে অবশ্যই ঢুকতে হবে প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্রে। এখানে বিভিন্ন পশু পক্ষির মডেল থেকে ফরেস্ট সম্পর্কে নানান জ্ঞান আরোহণ করতে পারবেন দর্শকরা। এই কেন্দ্রের কাছেই রাস্তার উপর রয়েছে এক আশ্চর্য বস্তু। প্রায় কয়েক লক্ষ কোটি বছরের প্রাচীন গাছের জীবাশ্ম। যেটি এই রমনা বাগান জুলোজিক্যাল পার্কের অন্যতম আকর্ষণ।

মুখ্য বন বিভাগীয় আধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন,” শীতকাল মানেই ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের ঘুরতে বেরোনোর সময়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই এই সময় আমাদের রমনা বাগানে নানান পশু পাখি দেখতে ভিড় করেন। আমরা দর্শকদের মনোরঞ্জনের কথা চিন্তা করে বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য রমনাবাগানের ভিতর ফুড কোর্ট চালু করা। দর্শকরা এখানে ঘুরতে এসে অনেকটাই সময় কাটান। তাদের সঙ্গে ছোট ছোট বাচ্চারাও থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা সময় বিশ্রাম নিয়ে কিছু খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থা না থাকলে অনেকেই অসুবিধার সম্মুখীন হয় বলে আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। তাই সকল দর্শকদের কথা ভেবে খুব শীঘ্রই একটি ফুড কোর্ট চালু করা হবে। যেখানে দর্শকরা কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়ে নিয়ে আবার এই এলাকা কে ঘুরে দেখতে পারবেন। “

আরো পড়ুন