ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মাধবডিহি: শিক্ষামূলক ভ্রমণ, তবে কোনও কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিয়ে নয়। এই শিক্ষামূলক ভ্রমণ সরকারি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে। পূর্ব বর্ধমান জেলার মাধবডিহি থানার অন্তর্গত ঘুষ্ঠিয়া নন্দনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে আজ শিক্ষামূলক ভ্রমনের আয়োজন করলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা। শিক্ষামূলক ভ্রমণের স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ভারতবর্ষ তথা বিশ্বের ইতিহাসের দুটি পুণ্যভূমি কে। আর সেই পূর্ণ ভূমি দুটি হল জয়রামবাটি এবং কামারপুকুর। স্বাভাবিকভাবেই সেই পূণ্য ভূমি তে ভ্রমণ করার জন্য প্রবল উৎসাহ দেখা গেল স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে। চার দেওয়ালের মাঝে পড়াশোনা থেকে এ যেন সম্পূর্ণ আলাদা এই অনুভূতি।
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব এবং শ্রী শ্রী মা সারদার জন্মভূমি দর্শন করে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যাতে নিয়ম-নীতি, শিষ্টাচার, শৃঙ্খলা পরায়ণতা গড়ে ওঠে তার জন্যই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই শিক্ষামূলক ভ্রমনের পাশাপাশি বৃক্ষ রোপনের জন্য এক অনবদ্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। এই সময়ের বিভিন্ন ফল যেমন আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, অর্জুন সহ বিভিন্ন গাছের বীজ দিয়ে মাটির গোলা তৈরি করা হয়েছে।
ভ্রমণ বাসে যাওয়ার সময় গাছ লাগানোর উপযুক্ত ফাঁকা জায়গা দেখতে পেলেই সেখানেই সেই বিজের গোলা ফেলে দেওয়া হবে। আসন্ন বর্ষার বৃষ্টির জলে সেই মাটির গোলা গলে গিয়ে অঙ্কুরিত হবে বীজগুলি এবং তা গাছে রূপান্তরিত হবে। বর্তমানে যে তীব্র তাপ প্রবাহ চলছে তার থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল বৃক্ষ রোপণ করা। এসি লাগিয়ে ঘরকে সুরক্ষিত না করে বরং গাছপালা লাগিয়ে প্রকৃতিকে সুরক্ষিত করার বার্তা দিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় মালিক।
সব থেকে বড় কথা হল এই গোলাগুলি তৈরি করেছে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাই। প্রায় হাজারেরও বেশি বীজ রয়েছে এই গোলা গুলির মধ্যে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় মালিক নিজেও ১০০ টি বীজের গোলা নিজের উদ্যোগে তৈরি করেছেন। ছাত্রছাত্রীদেরকে শামিল করে শিক্ষক শিক্ষিকাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার মানুষজন।
শুধু তাই নয়, আগামী দিনে ঘুষ্ঠিয়া নন্দনপুর গ্রামকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে এক নম্বরে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে গ্রামবাসীদের সাথে নিয়ে। এই কথা জানান, মাতৃগৃহ নামে সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার উদয় চৌধুরী। অন্যদিকে বিদ্যালয়ের এই মহতী উদ্যোগের ভুয়োসি প্রশংসা করেছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত গাছ মাষ্টার নামে খ্যাত অরূপ চৌধুরী। তিনি বলেন ভ্রমণের সাথে সাথে এলাকায় সবুজায়ন তৈরি করার যে উদ্যোগ তা অবশ্যই প্রশংসনীয়।