ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমানের প্রসিদ্ধ সিতাভোগ-মিহিদানা ২০১৭সালে জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জি আই স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রায় পাঁচ বছর পর সেই স্বীকৃতির সার্টিফিকেট ২০জন বর্ধমানের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীর হাতে প্রশাসনিক ভাবে তুলে দেওয়া হল। এছাড়াও আউসগ্রামের ১২ জন ডোকরা হস্তশিল্পীর হাতেও জি আই সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়। ফলে এখন থেকে জি আই নির্ধারিত গুনগত মানের সীতাভোগ-মিহিদানা বিক্রি করতে কোনও বাধা থাকল না বলে এদিন জানিয়েছেন বর্ধমান সীতাভোগ-মিহিদানা ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সম্পাদক তথা মিষ্টি ব্যবসায়ী প্রমোদ কুমার সিং।
বৃহস্পতিবার বর্ধমান উন্নয়ণ পর্ষদের সভাকক্ষে একটি অনুষ্ঠানে জেলা থেকে ইতিমধ্যেই জি আই স্বীকৃতি পাওয়া বর্ধমানের সিতাভোগ-মিহিদানা ও আউসগ্রামের ডোকরা শিল্পীদের হাতে এই সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়। এদিন মোট ৩২ জনের হাতে এই সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, বিডিএয়ের চেয়ারম্যান কাকলি গুপ্ত তা, জেলা শিল্প দফতরের আধিকারিক অভিজিৎ কর, রাজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের আধিকারিক পারমিতা সাহা ও অন্যান্যরা।
এদিন অনুষ্ঠানে জি আই স্বীকৃতির জন্য কি কি পদ্ধতির প্রয়োজন, কিভাবে এই স্বীকৃতির জন্য আবেদন জানাতে হয় এই সমস্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। পাশাপাশি সীতাভোগ-মিহিদানার পর এবার পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে আর কোন কোন জিনিস জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জি আই স্বীকৃতির দৌড়ে রয়েছে সেই নিয়েও আলোচনা করেন আধিকারিকরা। বর্ধমানের গোবিন্দভোগ চাল, শক্তিগড়ের ল্যাংচা, টাঙ্গাইল শাড়ি, কালনার নোড়া পানতুয়া, রাখি, কাটোয়ার ক্ষিরের পানতুয়া ইত্যাদি প্রোডাক্ট কেও জি আই এর আওতায় কিভাবে আনা যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়।
সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিক পারমিতা সাহা জানান,” টাঙ্গাইল শাড়ি ও গোবিন্দভোগ চাল কে ইতিমধ্যেই জি আইয়ের জন্য নথিভুক্ত করা হয়েছে। প্রসেস চলছে। বাকি জিনিসগুলোর জন্যও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে আবেদন জানানোর জন্য বলা হয়েছে।” মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন,” পূর্ব বর্ধমান জেলায় অনেক কিছু রয়েছে যেসব জিনিসের বিশ্ব জুড়ে পরিচিতি ও কদর রয়েছে। যেমন কালনার ধাত্রীগ্রামে ও সুমদ্রগড় এলাকার টাঙ্গাইল ও জামদানি শাড়ি। এছাড়াও কাটোয়ার পরানের ক্ষীরের পানতুয়া, কালনার নোড়া পানতুয়া, মাখা সন্দেশ প্রভৃতি। এই সমস্ত জিনিস আগামীদিনে ভৌগলিক নির্দেশিকা নিবন্ধিত বা জি আই স্বীকৃতি পেলে একদিকে যেমন জেলার খ্যাতি বৃদ্ধি পাবে, পাশাপাশি, জেলার ঐতিহ্য সম্পর্কে জেলা, রাজ্য, দেশ তথা বিশ্বের মানুষ জানতে পারবেন। তাই এই জিনিস গুলিকেও আমরা জি আই স্বীকৃতির আওতায় আনার চেষ্টা শুরু করেছি।”