ক্রাইম

বর্ধমানে রেলে চাকরি প্রতারণা চক্রের ধৃতদের ৬জনের জেল হেফাজত, ১জনের পুলিশ হেফাজত

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: রেলের গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারনা চক্র চালানোর অভিযোগে মঙ্গলবার বর্ধমানের রেলওয়ে ইনস্টিটিউট থেকে ৭জন কে আটক করেছিল আরপিএফ। ধৃতদের কাছ থেকে প্রচুর জাল নথি, রবার স্ট্যাম্প সহ অন্যান্য ভুয়ো কাগজ উদ্ধার হয়েছিল। গতকালই ধৃতদের বর্ধমান থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় আরপিএফ।

বুধবার বর্ধমান থানার পুলিশ অভিযুক্ত শেখ জিন্নাত আলী ওরফে বাবর  (৩৪), বাড়ি বর্ধমান শহরের দুবরাজদিঘি, বাজেপ্রতাপপুর। অরূপ রতন মণ্ডল (৪৩), বাড়ি বর্ধমান শহরের ৩ নং ইছলাবাদ। রঞ্জিত কুমার সর্বজন ওরফে রঞ্জিত গাঙ্গুলী (৬৪), বাড়ি বর্ধমান শহরের শ্রীপল্লী এলাকার নিবাস ময়দান এলাকায়। বিবেকানন্দ মুখার্জি (৫১), বাড়ি কাটোয়া থানার বৈচি এলাকার সরগ্রাম। তারাশঙ্কর কুন্ডু (৫৮), বাড়ি গলসি থানার কোলকোল গ্রামে। প্রতুল কুমার রায় (৬৩), বাড়ি বর্ধমান শহরের ১২৩ মিঠাপুকুর ও ফজলু সেখ (৪৮), বাড়ি দেওয়ানদীঘি থানার নুতনগ্রাম সকলের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে বর্ধমান আদালতে পেশ করে। পাশাপাশি এই চক্রের সঙ্গে আরো কারা জড়িত আছে এবং আরো তথ্য অনুসন্ধানের স্বার্থে আদালতের কাছে শেখ জিন্নাত আলীর ১০দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানায়।

বিচারক শেখ জিন্নাত আলীর ৮দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। এবং বাকি অভিযুক্ত ৬জন কে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে আগামী ২৭আগস্ট ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রসঙ্গত মঙ্গলবার দুপুরে গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে বর্ধমান পৌরসভার বিপরীতে রেলওয়ে ইনস্টিটিউটে অভিযান চালিয়ে আরপিএফের অফিসারেরা ভুয়ো চাকরি চক্রের সাত জনকে আটক করে। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে উপস্থিত চারজন চাকরি প্রার্থী কেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বর্ধমান রেল স্টেশনের আরপিএফ পোস্টে নিয়ে আসে পুলিশ।

বর্ধমান থানা সূত্রে জানা গেছে, ধৃতরা সকলেই তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। জানা গেছে, এই চক্রের অন্যতম চাঁই গলসির কোলকোল গ্রামের বাসিন্দা তারাশঙ্কর কুন্ডু ও কাটোয়ার সরগ্রাম এলাকার বাসিন্দা বিবেকানন্দ মুখার্জি দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নামে বহু বেকার যুবক যুবতীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারণা চালিয়ে এসেছে। বর্ধমান শহরে রীতিমত অফিস খুলে এই প্রতারণার কারবার চালাতো কুন্ডু ও মুখার্জী বলে প্রার্থীদের অভিযোগ। এমনকি রেলে চাকরি করে দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে লাগবে বলেও জানিয়েছিল তারা।

তার মধ্যে গত এক বছরে বহু প্রার্থী প্রায় এক লক্ষ টাকা করে প্রতারকদের দিয়ে দিয়েছেন বলে চাকরি প্রার্থীরা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। আর এই কাজে সরাসরি জড়িত রয়েছে ধৃত শেখ জিন্নাত আলী, অরূপ রতন মন্ডল, রণজিৎ গাঙ্গুলি, প্রতুল কুমার রায় ফজলু শেখ সহ আরো একাধিক ব্যক্তি। অভিযোগ এর আগেও তারাশংকর কুন্ডু সহ এই চক্রের অনেকে প্রতারণার মামলায় জেল খেটেছে। এখন পুলিশ এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরো কারা জড়িত রয়েছে তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।

Recent Posts