পশ্চিমবঙ্গ

গভীর রাতে জাতীয় সড়কের ধারে ধাবায় খেতে গিয়ে বর্ধমানে দুর্ঘটনায় মৃত জুনিয়র চিকিৎসক, হোস্টেলের নজরদারি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

FOCUS BENGAL

FOCUS BENGAL

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: গভীর রাতে বর্ধমানের নবাবহাটের কাছে জাতীয় সড়কের ধারে ধাবায় খাবার খেতে গিয়ে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এক জুনিয়র চিকিৎসকের। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ওই জুনিয়র চিকিৎসকের বান্ধবীও। মৃত জুনিয়র চিকিৎসকের নাম অভিনিত কুমার (২৫)। বাড়ি বিহারের নালন্দা জেলায়। দুর্ঘটনার পরই সঙ্গে থাকা অন্য সঙ্গীরারাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক অভিনিত কে মৃত ঘোষণা করেন। আহত বান্ধবী কে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে রাতেই দুর্ঘটনার খবর অন্যান্য হোস্টেলে ছড়িয়ে পড়তেই সহপাঠী জুনিয়র ডাক্তাররা ছুটে আসেন বর্ধমান মেডিক্যালে। কিন্তু অভিনিতের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবরে সকলের মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া। এরই পাশাপাশি এই ঘটনার পর মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেল গুলোর নিয়মকানুন ও নজরদারি নিয়ে উঠতে শুরু করেছে একাধিক প্রশ্ন।

বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তব নায়েক জানান, ‘ হোস্টেল গুলিতে রেজিস্টার মেনটেনের বিষয়টি আবশ্যিক করা হবে। নিয়মিত রেজিস্টার মেনটেন করা হচ্ছে কিনা তা নজর রাখবে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও কোন পড়ুয়ার কখন হাসপাতালে ডিউটি রয়েছে তার তালিকা হোস্টেলের গেটে লাগিয়ে দেওয়া হবে। এই ধরনের ঘটনা এড়াতে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।’ যদিও এর আগেও হোস্টেলের রেজিস্টার মেনটেন করার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ বলেই তথ্য উঠে এসেছে।

পুলিশ ও মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে শনিবার রাতে মেডিক্যাল কলেজ থেকে আটজনের একটি দল ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশের একটি ধাবায় খাবার খেতে গিয়েছিল। খাবার খেয়ে ফেরার সময়ে রাস্তা পার হবার সময়ে একটি পিকআপ ভ্যান এসে অভিনিত কুমার কে ধাক্কা মারে। অভিনিতের পাশে থাকা তার এক বান্ধবীও দুর্ঘটনায় জখম হয়। দুজনকেই উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে আসেন বাকি সঙ্গীরা।

বিহারের নালন্দা জেলার বাসিন্দা অভিনিত এর বাড়িতে খবর পাঠানো হয় হাসপাতাল থেকে। বর্ধমান থানার পুলিশের কাছেও দুর্ঘটনার খবর পৌঁছে যায়।  পুলিশের টহলদারি ভ্যান পিকআপ ভ্যানের নম্বর জোগাড় করে তল্লাশি শুরু করে। কিছুক্ষুনের মধ্যে ধরাও পড়ে পিকআপ ভ্যানটি। চালক কে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে পিকআপ ভ্যানটি কে। রবিবার সকালে বিহারের নালন্দা থেকে হাসপাতালে আসেন অভিনিতের বাবা উগ্রসেন প্রসাদ, মামা বিজয়কুমার ভার্মা সহ পরিবারের লোকেরা। মর্গে অভিনিতের বিকৃত মৃতদেহ দেখে কার্যত আঁতকে ওঠেন সকলেই।

মেডিক্যাল কলেজে ময়না তদন্তের পরে কোন সহপাঠিকেই মালা অবধি দিতে দেয়নি পরিবারের লোকেরা। সংবাদ মাধ্যমের সামনেই মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দেন তাঁরা। পরে বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ জানান অভিনিতের মামা বিজয়কুমার ভার্মা। ঘাতক গাড়িটির চালকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

Advertisement