ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,কালনা: এক নাবালিকা কে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে তারই বাড়ির পেঁপে গাছ তলায় জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছিল সুব্রত হালদার নামে কালনার সাতগাছি এলাকার এক যুবক। মেয়ের কাছে ঘটনার কথা জানতে পেরে নাবালিকার মা কালনা থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই ঘটনার প্রায় এক বছর আট মাস পর কালনা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুধীর কুমার শুক্রবার আসামির সাজা ঘোষণা করলেন। আসামি সুব্রত হালদারের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ এ বি ধারায় ও পকসো আইনে ৪ উপধারায় ২০বছর জেল হেফাজত, ১০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছ মাসের জেল হেফাজতের সাজা ঘোষণা করেছেন বিচারক।
সাজা ঘোষণার পর এই মামলার সরকারি আইনজীবী মলয় পাঁজা বলেন,” ২০২০ সালের ১৪অক্টোবর কালনা শহরের সুভাষপল্লী এলাকার বাসিন্দা নাবালিকার মা তার মেয়েকে পাড়ার মুদি দোকান থেকে ডাল ও ম্যাগী কিনতে পাঠিয়েছিলেন। সেই সময় আসামি প্রতিবেশী যুবক সুব্রত হালদার ওই নাবালিকা তার মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে গেছে বলে জানায়। তাকে বলে মোবাইল ফোনটা তার বাড়িতে দিয়ে আসার জন্য। নবিলাকা সরল মনে ফোন নিয়ে আসামির বাড়িতে পৌঁছলে দেখে বাড়ির বাইরে থেকে শিকল তোলা রয়েছে। সে এই দেখে ফিরে আসার উদ্যোগ নেয়। সেই সময় আসামি নাবালিকার পিছু পিছু বাড়ির সামনে চলে আসে। আর এরপর নাবালিকাকে বাড়ির মধ্যে পেঁপে গাছ তলায় নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। মেয়েটি কোনরকমে বাড়ি ফিরে এসে তার মাকে ঘটনার কথা জানায়। এরপর তার মা কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আসামির বিরুদ্ধে।
কালনা থানার তৎকালীন ওসি রাকেশ সিং এই ঘটনার তদন্তের জন্য এস আই সোমনাথ নস্কর কে দায়িত্ব দেন। গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্তকে। এরপর ঘটনার অদন্তে নেমে পুলিশ ১৬জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট আদালতে পেশ করে পুলিশ। সমস্ত দিক বিবেচনা করে ঘটনার প্রায় এক বছর আট মাস পর আসামির সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক। যদিও আদালতে মামলা চলাকালীন সামাজিক লজ্জার চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয় নাবালিকা।
এদিন রায় ঘোষণার পর নাবালিকার মা আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন,” এই রায়ে আমি খুশি, কিন্তু ফাঁসি হলে আরো খুশি হতাম । আজ যদি মেয়েটা বেচেঁ থাকতো তাহলে আমার আর কোনো দুঃখ থাকতো না। ওই ছেলেটা আমার সব শেষ করে দিয়েছে।” অন্যদিকে আসামিপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।