ওয়েবসাইট নকল করে তৈরি হচ্ছিল বালি পাচারের নকল চালান, আন্তঃজেলা বড়সড় চক্রের হদিস পেল খন্ডঘোষ থানা

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, খন্ডঘোষ: সরকারি ওয়েবসাইট নকল করে ডুপ্লিকেট চালান তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল বালির গাড়ির অবৈধ পাসিং। বিশ্বস্ত সূত্রে খবরের ভিত্তিতে সেই তথ্য পাওয়ার পরই পূর্ব বর্ধমানের খন্ডঘোষ থানার পুলিশ তদন্তে নেমে আন্তঃজেলা জাল চালান চক্রের চার কারবারিকে পাকড়াও করেছে। নকল চালান তৈরী করে যে পরিমান বালি ইতিমধ্যেই পাচার করা হয়েছে তার পরিমান প্রায় একশো কোটি টাকারও বেশী হতে পারে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।

বিজ্ঞাপন

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘বেশ কয়েকটি জেলার বালি কারবারের সঙ্গে যুক্ত বড় মাথারা জড়িত রয়েছে এই চক্রের সঙ্গে। কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ লোকেদের সাহায্য নিয়েই এই চক্রটি কাজ করছিল বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে এই চক্রের হদিস করা হবে ।’ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতদের মধ্যে দু’জন কে ধরা হয়েছে খন্ডঘোষ থানারই পলেমপুর এলাকা থেকে। অন্য দুজনকে ধরা হয় খন্ডঘোষ থানার খেজুরহাটি এলাকা থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম লায়েক আজাহারউদ্দিন, মীর আবু সিদ্দিক, শেখ মনোজ ওরফে সরাফউদ্দিন ও শেখ মনিরুল হোসেন। এদের মধ্যে শেখ মনোজের বাড়ি বর্ধমান থানার লস্করদীঘি এলাকায়, মনিরুলের বাড়ি রায়না থানার জোৎসাদি গ্রামে। অন্য দুজন খন্ডঘোষ থানা এলাকারই বাসিন্দা।

ধৃতদের শুক্রবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করে পুলিশ সাতদিনের হেফাজতে চাইলে বিচারক চার দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন। জানা গিয়েছে এই চক্রে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়ার আরও বেশ কিছু মাথা জড়িত। গোটা চক্রটিকে ধরার জন্য ইতিমধ্যেই পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুপ্রভাত চক্রবর্তী শুক্রবার খন্ডঘোষ থানায় একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘ বালি কারবারের সঙ্গে যুক্ত একটি সিন্ডিকেট সরকারি ওয়েব সাইট কে নকল করে প্রায় একই ধরনের আরেকটি ডোমেন কাজে লাগিয়ে চালান তৈরি করছে। সেখানে শুধুমাত্র বালির গাড়ির নম্বর ও ঘাট থেকে বেরোনোর তারিখ ও সময় পরিবর্তন করে রীতিমত জালিয়াতি চালাচ্ছিল। সেক্ষেত্রে আসল নকল বোঝার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। এমনকি নকল কিউআর কোড ব্যবহার করা হচ্ছিল চালানে।

প্রাথমিকভাবে কর্তব্যরত অফিসারেরা এই বিষয়টি ধরতে না পারায় দিনের পর দিন শতাধিক গাড়ি এই সুযোগে অবৈধ চালানে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেরিয়ে গেছে। বহু টাকার অবৈধ লেনদেনের হিসেব পেয়েছি আমরা। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া জেলায় বড় একটা চক্র কাজ এই জালিয়াতিতে সক্রিয় ছিল বলে জানতে পেরেছি। আর তারপরই এই চক্রকে ধরার পরিকল্পনা করা হয়। ধৃতদের হেফাজতে নেবার পরে চক্রের বাকিদেরও ধরা হবে। ধৃতদের কাছ থেকে ৪ টে মোবাইল ফোন সহ বেশ কিছু নকল চালান বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’

আরো পড়ুন