জমি সংক্রান্ত মামলায় এক পক্ষকে ভুল ঠিকানায় চিঠি ভূমি দপ্তরের, দু পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা মেমারিতে

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারি: জমি সংক্রান্ত মামলার শুনানির জন্য ভূমি দপ্তর থেকে দু পক্ষকে পাঠানো চিঠির এক পক্ষের চিঠিতে ঠিকানা ভুল থাকা কে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার মেমারি ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরে যুযুধান দুপক্ষ  তুমুল বচসা ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়লেন। এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা তৈরী হয় অফিস চত্বরে। অভিযোগ চিরঞ্জিত ভট্টাচার্য নামে এক মুহুরী সরকারি নোটিশ থেকে দু পক্ষকে হিয়ারিং এর জন্য যে চিঠি পাঠিয়েছে তার মধ্যে এক পক্ষের চিঠির ঠিকানা ভুল লেখায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ করতেই ভূমি দপ্তরের সামনেই এদিন দুপক্ষের মধ্যে তুমুল বাক বিতন্ডা থেকে মারামারি লেগে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মেমারি থানার পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিজ্ঞাপন

মেমারি কদমপুকুর নিবাসী মহঃ হায়দার ও শাহাজাদা আলম অভিযোগ করেছেন, মুহুরী অভিজিৎ ভট্টাচার্য দীর্ঘদিন ধরে এই সব বেআইনি কান্ড ঘটাচ্ছে। হিয়ারিং এর চিঠিতে ভুলভাল ঠিকানা দিয়ে এক পক্ষ কে বিভ্রাম্ত করছে। তাদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা যে শুধু ঘটেছে তাই নয়, মামলার প্রথম পক্ষের ব্যক্তিরা মুহুরীর উসকানিতে তাদের মহিলা, বাচ্চা সহ অন্যান্যদের মারধর করেছে। বিএলআরও অফিস দুর্নীতির আখরা তে পরিণত হয়েছে। খোদ ব্লক ভূমি আধিকারিক এই সমস্ত দুর্নীতির সাথে যুক্ত বলেও তারা অভিযোগ করেছেন এদিন।

প্রসঙ্গত মেমারি বিএলআরও অফিসের কাজকর্ম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করছেন সাধারণ মানুষ। জেলাশাসক কেও এই ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছেন অনেকে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন সুরহা হয়নি বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। এদিনের ঘটনার ব্যপারে ব্লক ভূমি আধিকারিক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘এব্যপারে তার কোন দায় নেই। সমস্ত ঘটনাটি মুহুরি সম্পর্কিত ও অফিসের বাইরে হয়েছে। মুহুরী অফিসের কেউ নন। সাধারণ মানুষ তাদের কিছু সুবিধার জন্য মুহুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ করে হয়তো, সরাসরি অফিসে এসেও যে কেউ তাদের সমস্যা সমাধান করতে পারেন।’ অর্থাৎ ভূমি আধিকারিক গোটা ঘটনার বিষয়টিতে যে অফিসের কেউ জড়িত নয় সেটাই জানিয়েছেন।

যদিও ভূমি দপ্তরে বিভিন্ন কাজে আসা সাধারণ মানুষদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, সরকারি কাজে বহিরাগত ব্যক্তিরা হস্তক্ষেপ করছে কেন সেই ব্যাপারে কেন কোন পদক্ষেপ করছেন না আধিকারিক বা প্রশাসন? আর এই ঘটনা নতুন কিছু নয়, এর আগেও বহু মানুষকে নানান ভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে এই মুহুরী দের কাজকর্মে। জমির রেকর্ড পাল্টে যাচ্ছে এই অফিসের এক অসাধু চক্রের মাধ্যমে। আসলে এই ভূমি দপ্তর হচ্ছে দুর্নীতির ঘুঘুর বাসা। বিএলআরও অফিস সমস্ত ঘটনায় দায় এড়িয়ে গেলেও, কী করে হিয়ারিং এর চিঠিতে পার্টির ভুল ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে তার দায়ভার ভূমি আধিকারিক অস্বীকার করতে পারেন না বলেই অনেকের অভিযোগ।

অন্যদিতে অভিযুক্ত মুহুরী চিরঞ্জিৎ ভট্টাচার্য নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘ হিয়ারিং এর জন্য পাঠানো একটি চিঠিতে ঠিকানা ভুল হয়েছে, কিন্তু সেক্ষেত্রে হিয়ারিং অফিসার ভুল ঠিকানা দেখে বাতিল করে দিতে পারেন।এব্যপারে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা।’ যদিও এদিনের ঘটনার প্রসঙ্গে অপর পক্ষের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। কিন্তু জায়গা, জমির রেকর্ড নিয়ে মেমারি বিএলআরও অফিসে এসে যে সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হয়, সেকথা সবাই জানে বলেই জানিয়েছেন ভুক্তভোগী অনেকেই। এমনকি অফিসের আধিকারিক ও মুহুরীদের মধ্যেও গোপন যোগসাজস রেখে অফিসের কাজকর্ম চলে তা নিয়েও এবার সরব হচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ বলেই এদিন অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

আরো পড়ুন