রাজনীতি

২জুন বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনের ডাকে জেলা পরিষদ অভিযান, পুলিশি তৎপরতা তুঙ্গে

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে ২জুন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের অন্যান্য জেলায় এই অভিযান কর্মসূচি সংগঠিত করেছে বাম ছাত্র যুব সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। স্বাভাবিকভাবেই আগামী ২তারিখের এসএফআইয়ের এই কর্মসূচি ঘিরে জেলা পুলিশ মহলে তৎপরতা তুঙ্গে। প্রসঙ্গত গত বছর ৩১ আগস্ট সিপিএমের আইন অমান্য কর্মসূচি কে সামনে রেখে কার্যত বর্ধমান শহরের কার্জন গেট চত্বরে রীতিমত তাণ্ডব চালিয়েছিল সিপিএম নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা।

কার্জন গেট এলাকায় ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়কের উদ্যোগে সরকারী বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচারের জন্য লাগানো সাইন বোর্ড, বিশ্ব বাংলা লোগো ভেঙে ফেলেন মিছিলে আসা সিপিএম কর্মী সমর্থকরা। এমনকি ইট ছুঁড়ে উন্মত্ত সিপিএম ক্যাডাররা বিধায়কের সহায়তা কেন্দ্রে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ওইদিন সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহ: সেলিম। কর্মসূচি কে ঘিরে ব্যাপক পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী, তবুও মারমুখী সিপিএম ক্যাডারদের প্রথমে সামাল দিতে ব্যার্থ হয় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে সিপিএম কর্মী সমর্থকদের দফায় দফায় খণ্ড যুদ্ধ বাঁধে। সিপিএম কর্মীদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে বেশ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক জখম হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ কে কাঁদানে গ্যাসের সেল, জল কামান ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে হয়। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কার্জন গেট চত্বর। পড়ে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। হিংসার ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে পুলিশ বহু সিপিএম নেতা, কর্মী, সমর্থক কে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে আলোড়ন পড়ার পাশপাশি নিন্দার ঝড় বয়ে যায় রাজনৈতিক মহলে।

আর গত বছরের সেই তাণ্ডবের প্রায় ৯ মাস পর আগামী ২জুন বাম ছাত্র যুব সংগঠনের ডাকা জেলা পরিষদ অভিযান ঘিরে তাই ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। স্বাভাবিকভাবেই এসএফআইয়ের এই কর্মসূচি ঘিরে এবার আগাম একাধিক প্রস্তুতি নিতে চলেছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। এব্যাপারে রবিবার রাতে ও সোমবার সকালে বর্ধমানের জিটি রোড এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায়, এসডিপিও (দক্ষিণ) সুপ্রভাত চক্রবর্তী, বর্ধমান থানার আই সি সুখময় চক্রবর্তী, ট্রাফিক ওসি চিন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।

পুলিশ সূত্রে জানাগিয়েছে, আগামী ২জুন পার্কাস রোড এলাকা থেকে শুরু করে কাছারি রোড এলাকায় পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ ভবন পর্যন্ত এসএফআই (SFI), ডিওয়াইএফআই (DYFI) মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এই মিছিলকে ঘিরে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে। কার্জন গেট থেকে জেলা পরিষদ পর্যন্ত রাস্তায় জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড তৈরি করা হবে। এছাড়া, এদিন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। মিছিলের শুরু থেকে শেষ অবধি সমস্ত কর্মসূচিকে সিসি ক্যামেরায় বন্দী করা হবে। যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি কিংবা আইন শৃংখলার অবনতি না ঘটে তার জন্য জল কামান থেকে শুরু করে কাঁদানে গ্যাস সব কিছুই মোতায়েন রাখা হবে বলে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে।

এসএফআই নেতা অনির্বাণ রায়চৌধুরী বলেন,’ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে, শিক্ষা ও চাকরি চুরি রুখতে, মাতৃ ভাষায় শিক্ষার অধিকারের দাবিতে, জেলার ৩৩৮টি সরকারি স্কুল বন্ধের প্রতিবাদ সহ রাজ্য সরকারের একাধিক দুর্নীতির প্রতিবাদে বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনের পক্ষ থেকে ২জুন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ অভিযান কর্মসূচি সংগঠিত করা হবে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্র যুবরা এদিন মিছিলে পা মেলাবেন। মিছিলে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্র ও রাজ্যের একাধিক ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ইতিমধ্যে আমরা এই অভিযান কে সামনে রেখে ব্যাপক দেওয়াল লিখন থেকে প্রচার অভিযান চালিয়েছি।’

Recent Posts