আবেদনকারীর অভাব, রেলের ‘ওয়ান স্টেশন ওয়ান প্রোডাক্ট’ প্রকল্পের স্টলে বিক্রি হচ্ছে লটারির টিকিট

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, মশাগ্রাম: দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক মানুষের হাতের তৈরি পণ্য, জি আই সার্টিফিকেট প্রাপ্ত দ্রব্য, আদিবাসী মানুষের তৈরি জিনিস, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি প্রোডাক্ট সহ গোটা দেশের রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় পরিচিত পণ্য গুলোকে আরো বেশি প্রচার প্রসারের জন্য রেল দপ্তরের পক্ষ থেকে রেল স্টেশনগুলোতে চালু করা হয়েছে ‘ওয়ান স্টেশন ওয়ান প্রোডাক্ট’ প্রকল্প। বেশকিছু স্টেশনে ইতিমধ্যেই এই স্টল রমরমিয়ে চললেও বেশিভাগ স্টেশনেই আবেদনকারীর অভাবে চালুই হয়নি এই প্রকল্প। আবার অনেকেই এই প্রকল্প সম্পর্কে এখনও ওয়াকিবহালই নয় বলেও জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বর্ধমান স্টেশনে গত আড়াই মাস ধরে এই প্রকল্পের স্টল ভালই চলছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী। বর্ধমানের সিতাভোগ মিহিদানা, রসগোল্লার পাশাপাশি ডোকড়া শিল্পীদের তৈরি পণ্য, হস্ত শিল্পের কিছু জিনিস এখানে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে রেলের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইন শাখার মশাগ্রাম স্টেশনে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে ওয়ান স্টেশন ওয়ান প্রোডাক্ট এর স্টল। স্টলের পিছনে প্রকল্পের ব্যানারও লাগানো হয়েছে। রাখা রয়েছে পণ্য সাজিয়ে রাখার জন্য একটা বড় টেবিল। কিন্তু এখনও কোনো আবেদনকারী এই স্টল পাওয়ার জন্য আবেদন জানায়নি বলেই স্টেশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে। ফলে ফাঁকাই পড়ে রয়েছে এই স্টল।

আর এই ফাঁকা স্টলেই বর্তমানে রমরমিয়ে চলছে লটারির টিকিট বিক্রি। স্টেশনে ট্রেন ধরতে এসে  যাত্রীদের অনেকেই কেটেও নিচ্ছেন এক দু ঘর লটারির টিকিট। ফলে এই নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। যদিও মশাগ্রাম স্টেশনের স্টেশন মাস্টার কে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আজ প্রচণ্ড বৃষ্টি পড়ছে। মনে হয় সেই কারণেই কেউ ভিতরে ঢুকে পড়েছে। এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি।” আর এরপরই ফোন হাতে নিয়েই তিনি অফিস থেকে বেরিয়ে লটারির টিকিট বিক্রেতা যুবককে ধমক দিয়ে স্টল থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এমনকি আরপিএফ কে ডেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোথাও বলতে শোনা যায় তাঁকে। 

প্রসঙ্গত কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২২-২৩-এ এই ‘ওয়ান স্টেশন ওয়ান প্রোডাক্ট’ প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছিল। যার লক্ষ্য হল রেলের প্রতিটি বিভাগ জুড়ে রেলওয়ে স্টেশনগুলিতে স্থানীয়ভাবে তৈরি প্রচলিত জিনিসগুলোর প্রদর্শন এবং বিক্রির সুযোগ তৈরির মাধ্যমে আয়ের সুযোগ বাড়ানো। পাশাপাশি স্থানীয় অঞ্চলের দেশীয় এবং বিশেষায়িত পণ্য এবং কারুশিল্পকে উৎসাহিত করা। এই সমস্ত পণ্যের মধ্যে রয়েছে হস্তশিল্প, প্রত্নবস্তু, বস্ত্র ও তাঁত, ঐতিহ্যবাহী পোশাক, স্থানীয় কৃষি পণ্য, প্রক্রিয়াজাত/আধা-প্রক্রিয়াজাত খাবার, মশলা, বনজ পণ্য, চন্দন-ভিত্তিক পণ্য, কফি, এলাচ, মিষ্টি ইত্যাদি।

মাত্র ১হাজার টাকার বিনিময়ে ১৫দিনের জন্য যেকেউ এই স্টলের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে। আবেদনের সংখ্যা বেশি হলে লটারির মাধ্যমে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সকলেই সময়ান্তর এই ব্যবসার সুযোগ নিতে পারবেন। স্থানীয়ভাবে তৈরি পণ্য আবেদনকারী তার নিকটবর্তী রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মেই স্টল থেকে বিক্রি করতে পারবেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একদিকে যেমন স্থানীয় প্রচলিত পণ্য সম্মন্ধে বহু মানুষ জানতে পারবেন, প্রচার বাড়বে, একইসাথে সেই সমস্ত পণ্য বিক্রি করে রোজগার বাড়াতে পারবেন প্রান্তিক মানুষেরা।

আরো পড়ুন