ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: আগামী ১৫আগস্ট থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই এবার শুরু হতে চলেছে নিউরো মেডিসিন বিভাগ। এতদিন দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত কোন রোগীকে নিয়ে আসা হলে বর্ধমান মেডিকেলে নিউরো সার্জারি বিভাগ না থাকায় সেই রোগীকে কলকাতায় রেফার করার প্রয়োজন হতো। কিন্তু যতক্ষণ না কলকাতা থেকে ‘বেড কনফার্মেশন’ পাওয়া যায়, ততক্ষণ হাসপাতাল রেফার করতে পারতো না। ফলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আসার পরেও রোগীকে বেশ কিছুটা সময় বিনা চিকিৎসায় থাকতে পড়ে থাকতে হয়।
এমনকি রেফার না লেখার ফলে রোগীকে কোন নার্সিংহোমে বা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করতে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়। এই টানাপোড়েনে রোগী কার্যত বেশ কিছুটা সময় বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকেন। প্রসঙ্গত কলকাতা বা বাইরে নার্সিংহোমে এই অবস্থায় রোগীকে নিয়ে যেতে হলে রোগীর পরিজনদের লামা ( লিভ এগেইনস্ট মেডিকেল এডভাইস) করে রোগীকে বের করতে হয়। এই সমস্যা নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মাথাব্যথা ছিল।
আর এবার এই পরিস্থিতির বদল ঘটাতে চলেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। হসপিটালের জরুরি বিভাগে নিউরো মেডিসিন বিভাগ শুরু করা হচ্ছে। যদিও নিউরো সার্জারির কোন ব্যবস্থা এখনও থাকছে না। তবে এতদিন বর্ধমান মেডিক্যালের মতো বৃহৎ হাসপাতালে এই নিউরো মেডিসিন বিভাগ না থাকার জন্য রোগীদের যেভাবে দীর্ঘক্ষণ বিনা চিকিৎসায় থাকতে হতো, এবার এই বিভাগ চালু হলে এই সমস্যা মেটানো যাবে বলেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বর্ধমান মেডিক্যালের সুপার ডা: তাপস ঘোষ বলেন, ‘ আগামী ১৫আগস্ট থেকে আমরা নিউরো মেডিসিন বিভাগ চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী। এরফলে দুর্ঘটনাগ্রস্থ রোগীর নূন্যতম প্রাথমিক চিকিৎসা আমরা দ্রুত শুরু করতে পারবো। এক লক্ষ থাকা ব্যয়ে পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এখানেই সিটি স্ক্যান করে, সেই রিপোর্ট বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের চিকিৎসকদের পাঠানো হবে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। এরফলে একদিকে যেমন রেফারের সংখ্যা কমবে, তেমনই রোগীরাও হাসপাতালে এসে ন্যূনতম চিকিৎসাটা পাবেন।’
উল্লেখ্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের উপর দুই বর্ধমান জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী প্রায় ৫টি জেলা এবং দুটি রাজ্য নির্ভর করে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীর চাপও আগের থেকে বেড়েছে বলেই কর্তৃপক্ষের দাবি। এইরকম গুরুত্বপূর্ণ একটি হাসপাতালে নিউরো সার্জারি না থাকা একটা বড় মাথা ব্যাথার কারণ ছিল এতদিন। মরণাপন্ন রোগীকে কলকাতা রেফার করা ছাড়া উপায় থাকতো না। এমনকি অনেক ক্ষেত্রেই ‘গ্রীন করিডোর’ করেও কলকাতায় পাঠানো হতো রোগীকে। এবার বর্ধমান হাসপাতালেই নিউরো মেডিসিন বিভাগ চালু হলে আশংকাজনক রোগীদের নূন্যতম প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া যাবে বলেই আশা প্রকাশ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।