জেলা

দামোদরের ওপর বিপজ্জনকভাবে বাঁশের সেতু দিয়েই যাতায়াত, নজরেই নেই প্রশাসনের

সৌরীশ দে,বর্ধমান: বর্ষায় জল বেড়েছে দামোদরের। তবু হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। দামোদর নদের উপর সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য তৈরি অস্থায়ী বাঁশের সেতুর নিচ দিয়ে বইছে জল। তবুও প্রাণ হাতে করেই এই অবস্থায় মোটর সাইকেল, সাইকেল কিংবা হেঁটে প্রতিদিন বহু মানুষ বিপদজনকভাবে নড়বড়ে সেতু পারাপার করছেন এখনও। বর্ষা শুরুর আগেই জেলা প্রশাসন নদীবক্ষ থেকে সমস্ত অস্থায়ী কাঠামো খুলে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু ঘোর বর্ষাতেও প্রশাসনের এই নির্দেশ কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রতিদিন বিপদজনক সেতু দিয়েই টোলের টাকা মিটিয়ে মানুষ নদী পারাপার করছেন।

উল্লেখ্য রায়না ১ব্লকের হিজলনা পঞ্চায়েতের বামুনিয়া ও হিজলনা থেকে দামোদর নদের ওপর বর্ধমানের সঙ্গে সংযোগরক্ষাকারী দুটি অস্থায়ী বাঁশের সেতু রয়েছে। একটি বামুনিয়া থেকে বৈকুণ্ঠপুর ২পঞ্চায়েতের হাটশিমুল পর্যন্ত। আরেকটি হিজলনা থেকে চৈত্রপুর পর্যন্ত। এর মধ্যে বুধবার রাতে জলের তোরে হিজলনার সেতুটি মাঝ বরাবর ভেঙে ভেসে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বন্ধ হয়ে যায় নদী পারাপার। কিন্তু এরপরও বামুনিয়া থেকে হাটশিমুলের দিকে সংযোগ রক্ষাকারী বাঁশের সেতু দিয়ে পারাপার চলছেই।

রায়নার বামুনিয়ার বাসিন্দা প্রভাত কুমার হালদার এদিন বর্ধমান আসছিলেন নিজের কাজে। সেতু পেরিয়ে এসে ফোকাস বেঙ্গলের প্রতিনিধির মুখোমুখি হয়ে তিনি জানালেন, ‘ পেট্রোলের অনেক দাম। পলেমপুর হয়ে কৃষক সেতু পেরিয়ে বর্ধমান গেলে যাওয়া আসায় প্রায় ১২কিলোমিটার বেশি রাস্তা হয়। তাই প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই এই সেতু ব্যবহার করছি। এই সেতু খুলে দিলে নদী পারাপারের জন্য নৌকা চালু হয়। একটা নৌকা একবার ওপারে গেলে ফের এপারে আসতে প্রায় এক ঘন্টা সময় লেগে যায়। কোন রোগী নিয়ে বর্ধমানে যেতে হলে হাতে সময় নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। এই দুদিন হলো জল কিছুটা বেড়েছে, নাহলে এতদিন জল কম থাকায় অসুবিধা ছিলনা।’

রায়না ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি রত্না মোহন্ত বলেন,’ এই সেতু দুটির প্রতিবছর টেন্ডার করে বার্ষিক ২৫হাজার টাকার চুক্তিতে অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বর্ষার সময় খুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া আছে। যদি এখনও সেতু দিয়ে মানুষ যাতায়াত করে এবং সেতু টি খোলা না হয়ে থাকে তাহলে আমি সেতু দুটির দায়িত্বে থাকা লোকেদের ডেকে আজই ব্যবস্থা নেবো।’ রায়না ১ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বামদেব মন্ডল বলেন,’ এই ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে হবে। যদি এই বর্ষার সময়েও মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সেতু দিয়ে যাতায়াত করে সেটা মারাত্মক ব্যাপার। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বন্ধ করার ব্যবস্থা করবো।’ অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন,’ কোনোভাবেই এই অবস্থায় নদীর ওপর বাঁশের সেতু ব্যবহার করা যায় না। কিভাবে এই সেতু চালু রয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখছি। অবিলম্বে এই সেতু খুলে ফেলতে হবে।’

Recent Posts