ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বিরল প্রজাতির শিকারী পাখি পাচার করার সময় বর্ধমান আরপিএফ এর হাতে ধরা পড়লো এক পাচারকারী। উদ্ধার হয়েছে পেরিগ্রিন ফ্যালকন প্রজাতির চারটি পাখি। বন দপ্তরকে খবর দেওয়া হলে বর্ধমান রমনাবাগান থেকে আধিকারিকরা এসে পাখি গুলো সহ ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায়। ধৃত পাচারকারীর নাম মোহম্মদ সোনু। বাড়ি বিহারের পাটনার চিড়িয়া মহল্লায় বলে আরপিএফ সূত্রে জানা গেছে।
বন দপ্তরের আধিকারিক কাজল বিশ্বাস জানিয়েছেন, ’পাখিগুলোর চোখ ছোট কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা ছিলো। যাতে কোন কিছু দেখতে না পায় তারা। সাধারণত চোখে না দেখলে আওয়াজ করেনা পাখিরা। পাখিগুলোর মধ্যে একটি বাচ্চা পাখিও রয়েছে। বাকি গুলো মাঝ বয়সী। এদের ফরেস্টে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হবে। কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রেখে প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া ব্যাবস্থা করা হবে।’
আরপিএফ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে প্রতিদিনের মতো বর্ধমান স্টেশনের বিভিন্ন প্লাটফর্মে নজরদারি চালানোর সময় ৫নম্বর প্লাটফর্মে এক ব্যক্তিকে দু হাতে দুটি নাইলনের ব্যাগ নিয়ে ঘুরতে দেখে আরপিএফ এর কর্মীদের সন্দেহ হয়। ওই ব্যক্তিকে আরপিএফ পোস্টে নিয়ে এসে ব্যাগ তল্লাশি করতেই দুটি ব্যাগের ভিতর দুটি খাঁচায় দুটি করে মোট চারটি পাখি দেখতে পাওয়া যায়। এরপর মোহম্মদ সোনু নামে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরপিএফ অফিসার জানতে পারেন, বিহারের পাটনা থেকে ডাউন রাজেন্দ্র নগর এক্সপ্রেসে ( ১১২৩৫২ ডাউন) এদিন সকাল ৫টা ১০ নাগাদ বর্ধমানে নামে সে। এখান থেকেই অন্য কারুর কাছে এই পাখিগুলোকে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে ধৃত জানিয়েছে। ধৃতকে ফেহাজতে নিয়ে এই পাখি পাচারের সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীদের খোঁজ করা হবে বলে বন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত পেরিগ্রিন ফ্যালকন একটি বিরল প্রজাতির দ্রুতগতির শিকারী পাখি হিসেবেই পরিচিত। মরু প্রদেশ ছাড়া পৃথিবীর অনেক প্রদেশেই এদের দেখা পাওয়া যায়। এরা অনেক উঁচু জায়গায় বা গভীর জঙ্গলের উঁচু গাছে থাকে। পেরিগ্রিন ফ্যালকন তার শক্তিশালী শিকার করার ক্ষমতা, উচ্চ প্রশিক্ষণযোগ্যতা, বহুমুখীতা এবং বন্দী প্রজননের কারণে বিশ্বে পরিচিত এবং সম্মানিত পাখি। এটি ছোট থেকে বড় পর্যন্ত বেশিরভাগই গেম বার্ড প্রজাতির বলে পরিচিত। এই পাখি মানব সভ্যতার যুগ যুগ ধরে ধর্মীয়, রাজকীয় বা জাতীয় প্রতীক হিসাবেও নানান দেশে ব্যবহৃত হয়েছে। পেরিগ্রিন ফ্যালকন তার গতির জন্য বিখ্যাত। এটি ঘণ্টায় ৩২০ কিমি (২০০ মাইল) এর বেশি গতিতে পৌঁছাতে পারে তার বৈশিষ্ট্যযুক্ত শিকারের (উচ্চ-গতির ডাইভ) সময়। এই সহজাত প্রবৃত্তির কারণে এই গ্রহের দ্রুততম প্রাণী হিসাবে পরিণত করে এই পাখিকে।