দলের নির্দেশে পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহার পঞ্চায়েত প্রধানের

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে খবরের বিলে অতিরিক্ত খরচ নিয়ে উপ প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান দুই ব্লকের কুড়মুন ২ পঞ্চায়েতের প্রধান তারা মালিক। আর এরপরই প্রধান ও উপ প্রধানের বিরোধের কারণে কুড়মুন ২ পঞ্চায়েতে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। প্রধান ও উপ প্রধান পঞ্চায়েতে না আসার ফলে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। পরে দলীয় বৈঠকে প্রধানের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে প্রধান সেই পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহার করেছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রধানের ক্ষোভ ছিল পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান বাসুদেব দের বিরুদ্ধে।

বিজ্ঞাপন

গোটা বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত এলাকায় বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হওয়ায় জেলা সভাপতির নির্দেশে ব্লকের নেতৃত্বরা বৈঠকে বসেন। সূত্রের খবর সেই বৈঠকেও তারা মালিক নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন। এরপরেই উপ প্রধান বাসুদেব দে কে কার্যত সতর্ক করে দেওয়া হয়। কোন অবস্থাতেই যেন পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে কোন বিরোধ তৈরী না হয় তারও নির্দেশ দেওয়া হয়। তারা মালিক কেও জানিয়ে দেওয়া হয় পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহার করে পঞ্চায়েতের কাজ অবিলম্বে স্বাভাবিক করার। পরবর্তী দিনে কোন সমস্যায় দল তার পাশেই থাকবে এমনও আশ্বাস দেওয়া হয়।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে সোমবার বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশিথ মালিক, ব্লক সভাপতি পরমেশ্বর কোনার ও অন্যান্য পঞ্চায়েত প্রধান ও উপ প্রধানদের নিয়ে এই বিষয়ে বৈঠক হয়। সেখানে প্রধান তারা মালিক দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে প্রধানকে না জানিয়ে অতিরিক্ত খাবার খরচ করার বিষয়ে উপ প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। তৃতীয় দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে ২৮০ জনের খাবারের খরচ দেখানো নিয়ে আপত্তি জানান প্রধান। এমনকি খাবারের দাম নিয়েও আপত্তি জানান তিনি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে বৈঠকে কেবলমাত্র ২০০ জনের খাবার খরচ দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও এই বৈঠকে উপ প্রধানকে ডাকা হলেও কুড়মুন ২ পঞ্চায়েতের উপ প্রধান বাসুদেব দে বৈঠকে উপস্থিত থাকেননি বলেই জানা গেছে।

বর্ধমান ২ ব্লকের বিডিওর কাছে পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহারের আবেদন জমা দেবার পরে তারা মালিক বলেন, ‘দলের জেলা ও ব্লকের নেতৃত্ব এই ঘটনার পরে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি তাদের সমস্তটা জানাই। কিভাবে দীর্ঘ চারবছর ধরে আমি পাশের চেয়ারে বসে থাকার পরেও ‘ফর’ দিয়ে আমার নামে সই করেছেন উপপ্রধান। আমাকে কিভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করেছে পদে পদে। সমস্ত কিছু শোনার পরে দলের ব্লকের নেতৃত্ব ও বিধায়ক নিশীথ মালিক আমাকে আশ্বস্ত করেন দলের তরফ থেকে আগামীদিনে সমস্ত সহযোগিতায় তারা করবেন। সাধারণ মানুষের যাতে কোন সমস্যা না হয় সে বিষয়টির কথা মাথায় রেখেই আমি তাই পদত্যাগ পত্র তুলে নেবার আবেদন করেছি। উপপ্রধানের মতন একজন স্বার্থপর, লোভী মানুষের জন্য সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ুক এটা দলও চায়না আমিও চাইনা। তাই দলের নির্দেশে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার কথা ভেবেই আমি সিধান্ত বদল করেছি।’

দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা দলগতভাবে নীতির সঙ্গে সততার সঙ্গে আপোষ করিনা। ওখানে যা সমস্যা হয়েছিল সেটা মিটে গিয়েছে। সাধারণ মানুষ পরিষেবার জন্য পঞ্চায়েতে আসেন। সেই কাজে কেউ বাধা হলে দল সেখানে কঠোর ব্যবস্থা নেবেই।’ বর্ধমান ২ ব্লকের বিডিও সুবর্ণা মজুমদার বলেন, ’২৮ তারিখে প্রধানের পদত্যাগ পত্র পাবার পরে আমরা ওনাকে নোটিশ করেছিলাম। কিন্তু সেই নোটিশের সময়সীমার আগেই উনি পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহারের জন্য চিঠি দিয়েছেন। ফলে এখন আগের পদত্যাগ পত্র বাতিল হয়ে গেল। উনি প্রধান হিসেবেই স্বাভাবিক কাজকর্ম করবেন।’

আরো পড়ুন