ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: রাজ্যে সমস্ত বাণিজ্যিক এবং যাত্রীবাহী যানবাহনে প্যানিক বাটন এবং লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস লাগানো বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নিয়েছে রাজ্য সরকার। গত বছর ১৪ নভেম্বর রাজ্য পরিবহন দপ্তরের পক্ষ থেকে এই নির্দেশ জারি করা হলেও এখনও এই নির্দেশ সার্বিকভাবে কার্যকর হয়নি বলেই সমীক্ষায় উঠে এসেছে। আর এরপরই আগামী ৩১মার্চের মধ্যে পরিবহণ দফতর সমস্ত বেসরকারি বাস, ট্যাক্সি এবং অ্যাপ ক্যাবগুলিতে প্যানিক বাটন এবং লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস (ভিএলটিডি) ইনস্টল করার নির্দেশ জারি করেছে। পাশাপাশি, সমস্ত বাণিজ্যিক দু চাকার গাড়ি, ই-রিকশা এবং অটোতেও তা বসাতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাদ দেওয়া হয়নি স্কুল বাসগুলিকেও।
প্রসঙ্গত পথ দুর্ঘটনা বা গাড়ি দুর্ঘটনা কমাতে ইতিমধ্যে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বর্তমান সরকার। সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফের মতো প্রকল্প চালু করা হয়েছে। তারপরেও দুর্ঘটনা পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। প্রতিদিনই রাজ্যের কোনও না কোনও প্রান্তে পথ দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনা পরই যদি সেই খবর দ্রুত পুলিশের কাছে পৌঁছে যায় তাহলে অনেকক্ষেত্রেই জীবনহানি অনেকটাই কমানো সম্ভব হয়। পাশাপাশি দুর্ঘটনাগ্রস্থ গাড়ির যাত্রীদের দ্রুত চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নিতে পারবে। এই অবস্থায় প্রতিটি বাণিজ্যিক গাড়িতে ভেহিকেল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস (ভিএলটিডি) লাগানো বাধ্যতামূলক করার কথা আগেই জানিয়েছিল পরিবহণ দফতর। এরই পাশাপাশি, যাত্রীদের বিশেষ করে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গাড়িতে প্যানিক বাটন রাখার কথাও বলেছিল পরিবহণ দফতর। সেই মতো আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই তা সার্বিকভাবে কার্যকর করতে চাইছে রাজ্য সরকার।
পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, যাত্রীদের বিশেষ করে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছে। বাণিজ্যিক গাড়ির মালিকরাও এবিষয়ে একমত। তবে তারা এনিয়ে সরকারের কাছে এর আগে আরও সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও বহু গাড়ি মালিকই এখনও এই ব্যবস্থা কার্যকর না করায় এবার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটতে চলেছে পরিবহন দপ্তর। আগামী ৩১মার্চের মধ্যে প্রতিটি বাণিজ্যিক গাড়িতে ভেহিকেল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস (ভিএলটিডি) লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই নির্দেশ না মানলে অর্থাৎ গাড়িতে এই সিস্টেম না বসানো হলে রুট পারমিট এবং ফিটনেস সার্টিফিকেট আটকে রাখা হবে বলেও জানানো হয়েছে দপ্তরের পক্ষ থেকে।
যদিও এই নিয়ে আপত্তি উঠেছে বেসরকারি বাস সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে। বেসরকারি সংস্থাগুলি এখনও পর্যাপ্ত সংখ্যায় ওই যন্ত্রের জোগান নিশ্চিত করতে পারেনি বলে খবর। গাড়িপিছু এই প্যানিক বাটন বসাতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ পড়বে। বাসের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী প্রতি দু’মিটার অন্তর থাকবে প্যানিক বাটন। ট্যাক্সি এবং অ্যাপ ক্যাবেও থাকবে এই প্যানিক বাটন। কোনও যাত্রী বিপদ বুঝে প্যানিক বাটন পুশ করলে ৩০ মিনিটের মধ্যে স্থানীয় থানা গাড়ির অবস্থান জেনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতে পারবে।
বর্ধমান পরিবহন দপ্তরের আধিকারিক অনুপম চক্রবর্তী বলেন,’ আমাদের জেলায় ইতিমধ্যেই সমস্ত বাণিজ্যিক গাড়িতে ভেহিকেল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস এবং প্যানিক বাটন লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। সরকার অনুমোদিত নির্দিষ্ট কয়েকটি কোম্পানি এই সরঞ্জাম সরবরাহের কাজ করছে। জেলা পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিস্টেম যাতে সঠিক ভাবে কার্যকরী হতে পারে তারও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মার্চ মাসের পর আমরা অভিযান চালাবো। যদি কোন বাণিজ্যিক গাড়ি এই দুটি সিস্টেম না লাগিয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’