ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: অস্ত্রোপচার চলছে। হঠাৎ করেই হাসপাতালের কর্মীরা বেরিয়ে এসে রোগীর পরিজনদের জানালেন, সেলাই করার সুতো কিনে আনুন। শুনে তাজ্জব হয়ে যান রোগীর পরিজনরা। তারা বলেন, সরকারি হাসপাতালে অপারেশন হওয়া রোগীর জন্য কেন বাইরে থেকে সেলাইয়ের সুতো আনতে হবে? এই শুনে কর্মীরা জানান, আগে সুতো আনুন নাহলে সেলাই না করেই রোগীকে ফেলে রাখা হবে। বেকায়দায় পড়ে তারপর তড়িঘড়ি বাইরে থেকে ৩৫০০ টাকা দিয়ে সুতো কিনে এনে দেন পরিজনরা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন রোগীর পরিজনরা।
জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার হার্নিয়ার অস্ত্রোপচারের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগে ভর্তি হন বিকাশ ঘোষ। ষাটোর্ধ বিকাশবাবুকে বুধবার সকাল সাড়ে নয়টা নাগাদ অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। বিকাশ বাবুর পরিজনদের দাবি, এই সময় হাসপাতালের কর্মীরা তাদের জানান অস্ত্রোপচারের পর সেলাই করার জন্য চারটি সুতোর প্রয়োজন। চারটি সুতার মধ্যে তিনটি সুতো হাসপাতাল থেকে দেওয়া হবে এবং একটি কিনে আনতে হবে বাইরে থেকে। অভিযোগ এরপর বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ অস্ত্রোপচার শেষ হওয়ার পর, হাসপাতালের কর্মীরা তাদের জানান সেলাই করার জন্য চারটি সুতোই বাইরে থেকে কিনে আনতে হবে। এই অন্যায় আবদারের প্রতিবাদ করেন রোগীর পরিজনরা। সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হওয়ার পর কেন সুতো বাইরে থেকে কিনতে হবে এই বিষয়ে প্রশ্ন করেন তারা?
বিকাশ বাবুর ছেলে বিপ্লব ঘোষ বলেন, হাসপাতালের কর্মীরা তখন তাদের জানান সুতো না আনলে সেলাই না করা অবস্থাতেই রোগীকে ফেলে রাখা হবে। এই কথা শুনে তড়িঘড়ি তারা বাইরের দোকান থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে চারটি সুতো এনে হাসপাতাল কর্মীদের হাতে দেন। বিপ্লব বাবুর দাবি, সুতো পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কর্মীরা বাবাকে ওটি থেকে বের করে আনেন এবং তাদের কেনা সুতো স্টোরে রেখে দেন। তাদের দাবি, অস্ত্রোপচার হওয়ার পর সেলাই করে রোগীকে শুধুমাত্র সুতো কিনে আনানোর অজুহাতে ওটি তেই ফেলে রাখা হয়েছিল।
সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হওয়ার পরেও মোটা টাকা দিয়ে বাইরে থেকে কেন সুতো কিনতে হবে এই প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিল্পব ঘোষ। তিনি বলেন, অসহায় রোগী এবং পরিজনদের ভয় দেখিয়ে সরকারি হাসপাতালে একটা অসাধু চক্র চলছে। এই ব্যাপারে অবিলম্বে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা উচিত। ঘটনা প্রসঙ্গে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, ‘বিষয়টি কতটা সত্যি সে বিষয়ে তাদের সন্দেহ আছে। অভিযোগ পত্র হাতে পাওয়ার পর তিনি বিষয়টি খোঁজখবর করতে বলেছেন।’