ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, গলসি: অবশেষে লাগাতার খবরের জেরে গলসি পুলিশ বেআইনি বালি কারবারের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত গোহগ্রামের শাসকদলের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যের ট্রাক্টর আটক করেছে। শনিবার সকালে দামোদর নদ থেকে বালি চুরি করে গোহগ্রামের বোম ঘাট ঢালে ওঠার মুখেই বালি বোঝাই ট্রাক্টরটি আটক করেন খোদ গলসি থানার ওসি অরুন সোম। যদিও ট্রাক্টরের চালক পুলিশ দেখে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। ট্রাক্টরটিতে বালি পরিবহনের কোন বৈধ কাগজ ছিলনা বলেই পুলিশ জানিয়েছে।

ফলে দীর্ঘদিন ধরে ফোকাস বেঙ্গল যে গলসির গোহগ্রাম এলাকায় বালি চুরির খবর প্রকাশ করে যাচ্ছিল, পুলিশের এই অভিযান এবং ট্রাক্টর বাজেয়াপ্তের ঘটনা কার্যত তাতেই সিলমোহর দিলো বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। যদিও ট্রাক্টর বাজেয়াপ্ত হলেও ট্রাক্টরের মালিক কে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে বেআইনি বালির গাড়ির বিরুদ্ধে পুলিশের লাগাতার অভিযান চলবে বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত গোহগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত লাগোয়া দামোদর নদের বাঁকুড়া জেলার অধীনে বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে দীর্ঘদিন ধরে কিছু বালি মাফিয়া নদী থেকে বালি চুরি করে দেদার পাচার করে চলেছে বলে অভিযোগ। বাঁকুড়া জেলার অধীনে ইন্দাস, পাত্রসায়ের থানার অন্তর্গত একাধিক মৌজা থেকে বালি চুরি চললেও ওই জেলার পুলিশ ও প্রশাসনের কোন নজরদারি বা অভিযান হয়না বলেই স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ। আর এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে অন্য জেলার সরকারি সম্পদ চুরি করে গলসি এলাকার কিছু বালি মাফিয়া নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে। নদী থেকে বালি চুরি করে গোহগ্রামের নতুন বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় সেই বালি মজুদ করে লরি ও ট্রাক্টরের মাধ্যমে দিনরাত পাচার করছে স্থানীয় শাসক দলের এক প্রভাবশালী প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য বলে অভিযোগ। আরো অভিযোগ, এই বালি কারবারের কোনো বৈধ অনুমতি বা কাগজপত্র নেই।
গোহগ্রামের দামোদর নদের সোজা ঘাট, টেনী যাদবের ঢাল, নন্দীর ঢাল, ডাক বাংলো ঢাল, গোপডাল বাঁশতলা সহ বোম ঘাট থেকে প্রতিদিন লাগাতার বালি চুরি চলছে বলে অভিযোগ। পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন অভিযানে গেলেই বা যাওয়ার আগেই কিছুক্ষণের জন্য বালি চুরি বন্ধ হয়। কিন্তু তারা চলে যেতেই ফের রমরমিয়ে শুরু হয়ে যায় নদী থেকে বালি লুট। পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে দিনের পর দিন এই লুকোচুরি চালাচ্ছে এলাকার কিছু বালি মাফিয়া বলে অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসীদের। এদিন পুলিশের অভিযানে খোদ প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য তথা এলাকার বেআইনি বালি কারবারের মাথার ট্রাক্টর আটক হওয়ার পর পুলিশ কে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এখন অনেকেই চাইছেন যতো দ্রুত সম্ভব ট্রাক্টরের মালিক কে গ্রেপ্তার করুক পুলিশ। একই সাথে নদী থেকে বালি চুরি বন্ধ করুক প্রশাসন।